May 4, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্ট

খালিশপুরে বাপ্পি হত্যা মামলার প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতারের দাবি

দ. প্রতিবেদক
খালিশপুর হাউজিং বাজার ১নং বিহারী ক্যাম্পের সুমন হোসেন বাপ্পি হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহত বাপ্পির পরিবার। আজ রবিবার খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন বাপ্পির মায়ের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোঃ ইকবাল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, মামলায় ১৪জন আসামীসহ গুরুত্বপূর্ণ আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। এদিকে বাপ্পির পরিবার থেকে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন ও নিরিহ মানুষকে মামলায় জড়ানোর ঘটনায় নানা প্রতিক্রিয়া ও আলোচনা, সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিরিহ মানুষকে হয়রানি না করার জন্য প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে আর্জি করেছে এলাকার সাধারণ মানুষ।
ঘটনার বিবরণে জানাযায়, গত ১৬ জুন ৭নং ক্যাম্পের কাছে হাউজিং বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী সুজন ও সুমনকে মারধোর করে ১নং বিহারী ক্যাম্পের মোঃ সবুজের পুত্র বাপ্পি। পরেরদিন সকালে আবারও ৭নং বিহারী ক্যাম্পে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় বাপ্পি। এ সময় ক্যম্পের বাসিন্দারা তাকে ধাওয়া দেয়। এ ঘটনায় বাপ্পি তার কোমেরে থাকা চাপাতি দিয়ে ক্যাম্পের লোকজনের উপর হামলা চালালে ক্যাম্পের বাসিন্দরা সংবদ্ধ হয়ে বাপ্পির কাছ থেকে চাপাতি কেড়ে নিয়ে তাকে জখম করে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে বাপ্পির অবস্থা অবনতি ঘটলে ওইদিন রাতে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ৪ দিন পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাপ্পির মৃত্যু হয়। এর আগে ১৮ জুন বাপ্পির স্ত্রী রানি খাতুন বাদী হয়ে ১২ জনের নামে খালিশপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সে অভিযোগটি এখন হত্যা মামলায় হিসেবে তদন্ত করছে খালিশপুর থানার পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক কাজী বাবুল হোসেন মামলার ১০ জন এজাহার নামীয় আসামীকে আলমনগর মোড় থেকে আটক করে আদালাতে পাঠান। শাবানা ও নাদিম নামে দুই আসামী পলাতক রয়েছে।
মামলায় ১২ জন এজাহার নামীয় আসামী থাকলেও সংবাদ সম্মেলনে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করার বিষয়ে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বিরুল আলম জানান, মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনরে বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অহেতুক কোন নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হবেনা বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, বাপ্পি খালিশপুর থানার একজন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, তার নামে মাদক, চাঁদাবাজি, হত্যা, মারামারিসহ ১০টি মামলা রয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে এলাকাবাসীর সাথে বাপ্পির সম্পর্ক ভালো ছিলনা।
এলাকাবাসী ও হাউজিং বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ নাদিম জানান, বাপ্পি বখাটে ছিল, ক্যাম্পের অনেককে মারধোর, তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। প্রতিবেশী গৃহিনী নুসরাত বেগম জানান, বাপ্পি বদমেজাজী ও বখাটে ছিল, এলাকায় প্রায় নিরীহ মানুষের সাথে মারামারি করতো। এদিকে বাপ্পি মারা যাওয়ার পর তার পরিবারের বিরুদ্ধে নিরিহ মানুষকে মামলায় জড়ানো ভয়ভিতি দেখানো এবং বাপ্পির দোসররাসহ বর্তমান একটি কুচক্রিমহল মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তোলে এলাকাবাসী।
১২নং ওয়ার্ড যুবলীগের আহবায়ক ও শিক্ষক হোসাইন সবুজ জানান, তার দায়ের করা একটি মামলার আসামী ছিল নিহত বাপ্পি। গত কয়েকদিন আগে মামলার বাদী ও তার পরিবার মামলায় নাম দেয়া হবেনা বলে তার কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করে। তিনি টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করায় তাকে প্রতিনিয়ত মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়টি তিনি থানার ওসিকে জানিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এ ঘটনায় গত ২৭ জুন খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ৭নং ক্যাম্পের বাসিন্দরা। ১ ও ৭নং ক্যাম্পের বাসিন্দারা নিরীহ মানুষকে বাচাঁতে এবং ঘটনার সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত আপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *