April 30, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্ট

শহীদ সাংবাদিক হুমায়ূন কবীর বালুর ১৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ

দ. প্রতিবেদক
আজ ২৭ জুন। দৈনিক জন্মভূমির প্রতিষ্ঠাতা, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, একুশে পদকে ভূষিত অকুতোভয় সাংবাদিক শহীদ হুমায়ূন কবীর বালুর ১৬তম শাহাদাৎবার্ষিকী। ২০০৪ সালের এই দিনে হুমায়ূন কবীর বালু নিজ প্রতিষ্ঠান দৈনিক জন্মভূমির প্রধান ফটকে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নির্মমভাবে নিহত হন।
দিনটি ছিল তাঁর জীবনের একাট আনন্দময় দিন। একমাত্র কণ্যা হুসনা মেহেরুবা টুম্পা মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে কৃতকার্য হয়। সেই আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে তিনি পুত্র আসিফ কবীর, কনিষ্ঠ পুত্র আশিক কবীর ও কণ্যা টুম্পাকে নিয়ে নগরীর ইকবালনগরস্থ বাড়িতে যান মাকে মিষ্টি মুখ করাতে। কিন্তু এ আনন্দঘন পরিবেশকে অশুভ কালো ছায়া দিয়ে মুড়ে দিতে একটুও হাত কাঁপেনি সন্ত্রাসীদের। ইকবালনগর থেকে নিজ গাড়িতে করে হুমায়ূন কবীর বালু এসে পৌছান জন্মভূমি ভবনে। প্রথমে গাড়ির বাম পাশ দিয়ে নামেন কনিষ্ঠ পুত্র আশিক ও টুম্পা। ডান পাশ দিয়ে প্রথমে নামেন জেষ্ঠ পুত্র আসিফ কবীর ও পরে হুমায়ূন কবীর বালু। গাড়ি থেকে নেমে দৈনিক জন্মভূমি ভবনের গেটে পা দিতেই সন্ত্রাসীরা জাতিসংঘ শিশু পার্কের সামনে থেকে তাঁর ওপর বোমা নিক্ষেপ করে। সন্ত্রাসীদের ছোড়া বোমা তাঁর শরীরে বিকট শব্দে বিষ্ফোরিত হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সাথে সাথে জন্মভূমি পরিবারের সদস্যরা, পাড়া প্রতিবেশী, সাংবাদিক ও আত্মীয় স্বজন তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ হুমায়ূন কবীর বালুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বোমার স্প্রিন্টার বড় ছেলে আসিফ কবীরের হায়ে লাগলেও সে আঘাতগুলি মারাত্মক ছিল না।
দিন আসে দিন যায়। প্রতিবারই শোক বিহ্বলতার মধ্য দিয়ে এ বেদনাদায়ক দিনটিকে স্মরণ করে নগরবাসী। একটি দিন, একটি মাস, একটি বছর করে প্রলম্বিত হয় ন্যায় বিচার পাওয়ার প্রত্যাশা। দীর্ঘ এগারটি বছর ধরে ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেছে শহীদ সাংবাদিক হুমায়ূল কবীর বালু হত্যার নেপথ্যে থাকা গডফাদাররা।
সাধারণ মানুষের পরিক্ষীত বন্ধু সাংবাদিক হুমায়ূন কবীর বালু রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিতে পেরেছিলেন বলেই খুলনার সাধারণ মানুষের প্রিয়পাত্র ছিলেন। এই জনপ্রিয়তার জন্য তিনি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের রোষানলে পড়েন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বালু পেশাগত দায়িত্ব পালনে সর্বদা আন্তরিক ছিলেন। তিনি ছিলেন দল-মত নির্বিশেষে সাংবাদিকদের পেশাগত ঐক্যের প্রতিক। খুলনার আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন আন্দোলনেও তাঁর ইতিবাচক অবদান খুলনাসহ অত্রাঞ্চলের জনগণ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। আমরা হুমায়ূন কবীর বালুর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
এদিকে খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক জন্মভূমি’র সম্পাদক হুমায়ুন কবীর বালু’র ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ক্লাবের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঃ বেলা ১০.৪৫ মিনিটে শহীদ সাংবাদিক স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং ১১টায় ক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *