April 24, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

রূপসার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও শীর্ষ সন্ত্রাসী মিনা কামাল বন্দুকযুদ্ধে নিহত

দ. প্রতিবেদক
খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও শীর্ষ সন্ত্রাসী মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামাল (৫৬) র‌্যাব-৬ এর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার খুলনা-মোংলা মহাসড়কের বাবুরবাড়ি এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পরে রামপাল উপজেলার ঝনঝনিয়া হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানে কামালের মৃত্যু হয়। রামপাল থানা পুলিশ হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠায়।
নিহত মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামাল রূপসা উপজেলার মিনহাজ উদ্দিনের ছেলে এবং রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। কামালের বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডে সস্পৃক্তের অভিযোগসহ পাঁচটি মামলার সাথে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
র‌্যাব-৬’র অধিনায়ক লে. কর্নেল রওশনুল ফিরোজ জানান, মাদক বিক্রেতাদের সাথে গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে বাবুর বাড়ি এলাকায় গেলে তারা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার জন্য র‌্যাবও গুলি চালায়। এক পর্যায়ে সশস্ত্র মাদক কারবারিরা পিছু হটলে ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত অবস্থায় মিনা কামালকে পাওয়া যায়। পরে মিনা কামালকে রামপালের ঝনঝনিয়া হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার মৃত ঘোষণা করেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৫০০ পিস ইয়াবা, একটি চাকু ও নগদ ৬৭ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা ঝনঝনিয়া হাসপাতাল থেকে কামালের মরদেহ উদ্ধার করেছি। সুরহাতল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। র‌্যাবের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়ের হলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তিনি।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, খুলনার রূপসা উপজেলার ভয়ংকর সন্ত্রাসী মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামাল (৫২)। জেলা পুলিশের শীর্ষ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর তালিকায় রয়েছে তার নাম। হত্যাসহ ৫টির বেশি মামলা, শতাধিক জিডি রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নিজ বাড়িতে বিচারালয়ের নামে বসিয়েছিলেন টর্চার সেল। সেখানে বিচার-সালিসের নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায়ে চালানো হতো অবর্ণনীয় শারীরিক-মানসিক নির্যাতন। বিচারের নামে হাতুড়িপেটা করে হাত-পা ও পাঁজরের হাড় ভেঙে দেয়া হতো। থেঁতলে দেয়া হতো শরীরের স্পর্শকাতর স্থান। এসব অপকর্মে লিপ্ত তাঁর সহযোগী ২০জনের সশস্ত্র বাহিনী। মিনা কামাল ও তাঁর বাহিনীর হাতে গত ১০ বছরে দুই শতাধিক মানুষ নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন কয়েকজন। ভয়ে-আতঙ্কে সহায়-সম্বল রেখে পরিবার নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে গেছে বহু পরিবার। মিনা কামালের সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে জিম্মি এলাকাবাসী। জবর দখল, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদক বাণিজ্য করে গড়ে তোলেন বিপুল অবৈধ সম্পদ।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *