April 25, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্ট

গিলাতলা ইউনিয়ন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ ও রস

ফুলবাড়ীগেট প্রতিনিধি
এক দশক আগেও চোখে পড়তো রসের হাড়ি ও খেজুর গাছ কাটার সরঞ্জামসহ গাছির ব্যস্ততা দৃশ্য। সাতসকালে খেজুরের রস নিয়ে গাছিরা বাড়ি বাড়ি হাকডাক দিতেন। শিরোমনি বিল ডাকাতিয়া, গিলতলা ইউনিয়নের মশিয়ালীর বুডির ভিটা, আফিলগেট রেল লাইনের পশ্চিম পাশের্^সহ বিভিন্ন পুকুর পাড়ে ও কৃষি জমির পাশে ছিল প্রচুর পরিমাণ খেজুর গাছ।
শীত মৌসুম শুরু হতেই গাছিরা ব্যাস্ত হয়ে পড়তো খেজুরের রস সংগ্রহ করার কাজে। সেই রসের চাহিদাও ছিল প্রচুর। ফলে রসে ভেজা বিভিন্ন পিঠা, পুলি ও পায়েসসহ নানা প্রকার খাবার তৈরি এবং খেজুরের নলিয়ান গুড় ছিল অন্যতম। গভীর রাতে ও ভোওে খেজুরের রস পান করাটাই ছিল যেন নেশার মত। এ জন্য গাছীদের রসের চাহিদার কথা আগেই বলে রাখতে হতো। ফলে যাদের খেজুর গাছ ছিল না তারাও রস খাওয়া থেকে বঞ্চিত হত না। তখন শীতে আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করত।
বিশেষ করে শীত মৌসুম এলে গাছীদের আনন্দের সীমা থাকত না। খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য মহাব্যস্ত হয়ে পড়ত তারা। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক এ মধু বৃক্ষকে ঘিরে গ্রামীণ জনপদে থাকত উৎসবমুখর পরিবেশ। এ সময় মেহমান আসা মানেই খেজুরের রস ও আমন ধানের ভিজানো পিঠা, সেমাই পিঠা, পুলি পিঠা, তার ভিতর রসের নাস্তা ছিল অন্যতম। পায়েশ দিয়ে আপ্যায়ন করা ছিল গ্রামের গৃহবধূদের ব্যস্ততা। তাছাড়া খেজুরের গুড় দিয়ে মুড়ির মোয়া, চিড়ার মোয়া ও মুড়ি খাওয়ার জন্য কৃষক পরিবার থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের শীতের মৌসুম ছিল অতিপ্রিয়।
স্থানীয় বাসিন্দা তোবারেক আলী সরদার বলেন, ইটভাটা, বাণিজ্যিক চাষ, সুষ্ঠু তদারকি না করার ফলে এ এলাকায় ঐতিহ্যের বাহক গ্রাম থেকে খেজুর গাছ আজ বিলুপ্তি প্রায়। যে হারে খেজুর গাছ নিধন হচ্ছে সেই তুলনায় রোপণ করা হচ্ছে না খেজুর গাছ। “পৌষ পার্বণে পিঠা খেতে বসে খুশিতে বিষম খেয়ে” নেই কোন খেজুর গাছ, নেই কোন রস, এ যেন নেমে এসেছে চাষীদের ধস।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *