May 17, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্ট

খুলনায় ১৫ দফা দাবিতে জ্বালানী তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ

দ: প্রতিবেদক

খুলনায় জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। গতকাল রবিবার ভোর ৬টা থেকে ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতিসহ জ্বালানি ব্যবসায়ীরা এ কর্মবিরতি শুরু করেন।

শ্রমিকরা পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিনটি তেল ডিপোর তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ রেখে এ কর্মসূচি পালন করছেন। ফলে খুলনাসহ বিভাগের ১৫ জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এদিকে, ধর্মঘটের ফলে অতিরিক্ত ট্রাক-লরির চাপে ফিলিং স্টেশন, ট্রাক-লরি স্ট্যান্ডে জায়গা না হওয়ায় ট্রাক-লরিগুলোকে সড়ক-মহাসড়কের দুইপাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।

আন্দোলনকারীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক অমীমাংসিত দাবিসমূহ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা তালবাহানা করছে। বারবার প্রতিশ্র“তি ভঙ্গ করেছে। ফিলিং স্টেশন তথা জ্বালানি ব্যবসায়ীদের ওপর অযথা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন দপ্তর থেকে বিভিন্ন ধরনের বিধান। যা মেনে নিয়ে জ্বালানি ব্যবসা করা আদৌ সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে জ্বালানি ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন।

বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ডিলার ডিস্ট্রিবিউটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম-মহাসচিব ও খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে সাত শতাংশ প্রদান, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট না-কি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিষয়টি সুনির্দিষ্টকরণ, প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরি শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বীমা প্রথা প্রণয়ন, ট্যাংকলরির ভাড়া বৃদ্ধি, পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পে অতিরিক্ত পাবলিক টয়লেট, জেনারেল স্টোর ও ক্লিনার নিয়োগের বিধান বাতিল, সড়ক ও জনপথ বিভাগ পেট্রোল পাম্পের প্রবেশদ্বারের ভূমির জন্য ইজারা গ্রহণের প্রথা বাতিল, ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতিত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল, বিএসটিআই আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ৫ বছর অন্তর বাধ্যতামূলক ক্যালিব্রেশনের সিদ্ধান্ত বাতিল, ট্যাংকলরি চলাচলে পুলিশি হয়রানি বন্ধ, সুনির্দিষ্ট দপ্তর ব্যতিত সরকারি অন্য দাপ্তরিক প্রতিষ্ঠান ডিলার বা এজেন্টদের অযথা হয়রানি বন্ধ, নতুন কোনো পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানি তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু, পেট্রোল পাম্পের পাশে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণের আগে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক ও বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরি থেকে জোরপূর্বক পৌরসভার চাঁদা গ্রহণ বন্ধ করা। এ ১৫টি দাবিতে আমরা ধর্মঘট পালন করছি।

তেল পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন বলেন, কর্মবিরতি চলাকালে খুলনার পদ্মা, মেঘনা, যমুনা তেল ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ রয়েছে। খুলনা বিভাগের ১০ জেলাসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলায় চলছে না ট্যাংকলরির চাকা। একইসঙ্গে পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির আয়োজনে বগুড়া প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ১ ডিসেম্বর থেকে পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। এদিকে শনিবার খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় কর্মসূচি সফলের আহŸান জানানো হয়।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *