May 3, 2024
জাতীয়

অর্থপাচার মামলায় এনু-রুপনের বিচার শুরু

পৃথক দুটি অর্থপাচার মামলায় ক্যাসিনো কারবারি বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা দুই ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু ও রুপন ভূঁইয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছন আদালত।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫–এর বিচারক মো. ইকবাল হোসেন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ফলে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।

বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. মতিয়ার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫–এর বিচারক মো. ইকবাল হোসেন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

মামলার বাকি আসামিরা হলেন- তুহিন মুন্সি, জয় গোপাল, আবুল কালাম আজাদ, নবী হোসেন, সাইফুল ইসলাম, এনামূল ও রুপনের ভাই মেরাজুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া, শহিদুল হক ভূঁইয়া এবং তাদের সহযোগী পাভেল রহমান। তবে এ মামলায় এনামূল ও রুপনের ভাই মেরাজুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া, শহিদুল হক ভূঁইয়া ও তাদের সহযোগী পাভেল রহমান পলাতক রয়েছেন।

২০২০ সালের ২২ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

জানা গেছে, এনু-রুপনের নামে ব্যাংকে ১৯ কোটি টাকা এবং পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ১২৮টি ফ্ল্যাটের খোঁজ মিলেছে। ক্যাসিনো ব্যবসার মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এ দুই ভাই।

২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়াদের পুরান ঢাকার বানিয়ানগরের বাসায় এবং তাদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে সাত কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সূত্রাপুর ও গেণ্ডারিয়া থানায় তাদের নামে ছয়টি মামলা হয়।

পরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এনু-রুপনের লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। ওই বাড়ি থেকে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে, পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজ এবং এক কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় দুই ভাইয়ের নামে আরও দুটি মামলা হয়।

অন্যদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) এনু-রুপনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করে। মামলায় এনুর বিরুদ্ধে ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা এবং রুপনের বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮২ টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তবে দুদক এখনো এ বিষয়ে আদালতে কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি।

সিআইডির তদন্তে ১২৮টি ফ্ল্যাট, ছয়টি গাড়ি ও কয়েক বিঘা জমির খোঁজ মিলেছে। সিআইডি তদন্ত করে দেখেছে, বাসায় নগদ টাকা ও স্বর্ণ রাখার পাশাপাশি ব্যাংকেও বিপুল পরিমাণ টাকা জমা রাখেন এনু ও রুপন ভূঁইয়া।

সিআইডির তদন্ত অনুযায়ী, তাদের ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে ১৯ কোটি ১১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৪ টাকা। পুরান ঢাকার বংশাল, ইংলিশ রোড, নয়াবাজার, মতিঝিল, শান্তিনগর, গুলশান, ধোলাইখাল, নবাবপুর এলাকায় সাতটি বেসরকারি ব্যাংকে এসব টাকা জমা রাখেন ক্যাসিনো কারবারি এই দুই ভাই। আদালতের আদেশে এসব টাকা এখন জব্দ রয়েছে।

২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের একটি ভবন থেকে এক সহযোগীসহ গ্রেফতার হন এনু-রুপন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *