April 19, 2024
খেলাধুলা

২৫৯ রানেই অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ

জার্মেইন ব্ল্যাকউড আর জশুয়া ডা সিলভা কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু ৯৯ রানের সেই প্রতিরোধ যখন ভেঙে দিলেন নাঈম হাসান, এরপর বালির বাধের মতই বাংলাদেশের স্পিনারদের প্রবল তোড়ে ভেসে গেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাকি ব্যাটিং শক্তি। ৫ উইকেটে ২৫৩ রান থেকে শেষ পর্যন্ত ক্যারিবীয়রা অলআউট ২৫৯ রানে। ৬ রানে পড়লো ক্যারিবীয়দের শেষ ৫ উইকেট। বল লাগলো মোট ২৩টি।

শেষ মুহূর্তে মেহেদী হাসান মিরাজ দুর্দান্ত বোলিং করলেন। তার ঘূর্ণির সামনেই বলতে গেলে নাকাল হয়েছে ক্যারিবীয়রা। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করার পর বল হাতে নিলেন ৪ উইকেট। দারুণ অলরাউন্ড নৈপূণ্য প্রদর্শণ করলেন মিরাজ।

স্পিনারদের দাপট আর বেশ কিছু ভুলের খেসারত দিলেও প্রথম সেশনটা ছিল বাংলাদেশেরই। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জার্মেইন ব্ল্যাকউড এবং জশুয়া ডা সিলভার ব্যাটে ভর করে ভালোই জবাব দিতে শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মোট কথা, দারুণ প্রতিরোধও গড়ে তোলে তারা।

এই দু’জনের ব্যাট ভর করে ১৫৪ রান থেকে ২৫৩ রানে গিয়ে পৌঁছায় ক্যারিবীয়রা। অর্থ্যাৎ, ৯৯ রানের জুট গড়ে তোলে তারা। এর মধ্যে আবার দুর্দান্ত এক হাফ সেঞ্চুরিও করে পেলেন জার্মেইন ব্ল্যাকউড। শেষ পর্যন্ত এই জুটিতে ভাঙন ধরান নাঈম হাসান।

ইনিংসের ৯৩তম ওভারে নাঈমের বল ব্যাকফুটে গিয়ে পুশ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে ফেলেন জশুয়া ডা সিলভা। বল চলে যায় উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে। ১৪১ বলে খেলা ৪২ রানের ইনিংসটি শেষ হয় তখই। ভাঙে ৯৯ রানের জুটিও।

পরের ওভারেই মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হলেন আরেক সেট ব্যাটসম্যান জার্মেইন ব্ল্যাকউড। এবারও ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়ালেন বোলাররা। মিরাজের বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে। শেষ হয়ে গেলো ৬৮ রানের ইনিংস। অর্থ্যাৎ ২৫৩ রানে বসিয়ে ক্যারিবীয়দের সেট দুই ব্যাটসম্যানকে তুলে নিল দুই স্পিনার নাঈম এবং মিরাজ।

১৪০ কেজি ওজনের ক্রিকেটার রাকিম কর্নওয়াল মাঠে নেমে করেন মাত্র ২ রান। মিরাজের দারুণ এক ঘূর্ণি বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। কেমার রোচ মাঠে নেমে আর কিছুই করে দেখাতে পারেননি। মিরাজের বলেই ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ মিঠুনের হাতে। জোমেল ওয়ারিকান মাঠে নেমে একটি বাউন্ডারির মার মারেন। কিন্তু ৭ বল মোকাবেলা করে তিনি বোল্ড হয়ে যান তাইজুলের বলে। সে সঙ্গে শেষ হয়ে যায় ক্যারিবীয়দের ইনিংস।

এর আগে প্রথম সেশনে কার্লোস ব্র্যাথওয়েট প্রতিরোধ গড়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ক্যারিবীয় বর্তমান দলটির মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানও তিনি। অভিজ্ঞতার কারণেই তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করলেন ৭৬ রান।

কিন্তু এই ব্র্যাথওয়েটও একসময় হার মানলেন বাংলাদেশের স্পিনার নাঈম হাসানের কাছে। বাংলাদেশি অফ স্পিনারের বলটি তিনি ভেবেছিলেন অফ স্ট্যাম্পের বাইরে দিয়ে চলে যাবে। ফ্রন্টফুটে খেলতে গিয়েও তাই চেড়ে দিলেন। কিন্তু তার হিসেবে ভুল ছিল। বল স্ট্যাম্পের বেল তুলে নিয়ে চলে গেলো। বোল্ড হয়ে গেলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক।

চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনের শুরুটাই হয়েছে স্পিনারদের দাপটের মধ্য দিয়ে। শেষ পর্যন্ত প্রথম সেশনটা শেষ হলো সেই দাপট নিয়েই। যদিও ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা টি-টোয়েন্টি স্টাইলে ব্যাট চালানোর চেষ্টা করেছে। যার ফলে প্রথম সেশনেই তারা রান তুলেছে শতাধিক (১১৪)। তবে উইকেট হারিয়েছে ৩টি।

আজ সকাল সকাল তাইজুল ইসলামের বিষাক্ত ঘূর্ণির সামনে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বসতে হলো ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান এনক্রুমাহ বোনারকে। আগের দিনের ৫১ রানের জুটিটা সেখানেই থাকলো। ১৭ রান করে দিনের প্রথম বলেই আউট হয়ে গেলেন বোনার।

তাইজুল ইসলামের করা বলটি হালকা আউট সুইং করেছিল। ব্যাট পেতে দিয়ে বোনার চেষ্টা করেছিলেন ঠেকানোর। কিন্তু বল স্পিন করে বেরিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে চুমা দিয়ে যায় বোনারের ব্যাট। প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো নাজমুল হোসেন শান্তর বলটি তালুবন্দী করে নিতে মোটেও কষ্ট হয়নি।

দ্বিতীয় বলেও ক্যাচের সম্ভাবনা ছিল। অভিষিক্ত কাইল মায়ারস ব্যাট করতে এসই তাইজুলের আরেকটি ইনসুইঙ্গার বলকে ডিফেন্স করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন উইকেটরক্ষক এবং প্রথম স্লিপের মাঝে। মুশফিকের গায়ে লাগার কারণে বলটি আর ধরতে পারেননি প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো শান্ত। ফলে টানা দ্বিতীয় বলের উইকেট থেকে বেঁচে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজের সেঞ্চুরির সুবাধে ৪৩০ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ১০৩ রান করেন মিরাজ। সাকিব করেন ৬৮ এবং সাদমান করেন ৫৯ রান। জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় দিন ২ উইকেট হারিয়ে ৭৫ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২টি উইকেটই নেন মোস্তাফিজুর রহমান।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *