April 23, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

সরকারি বিএল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রফেসর বি. করিমের ইন্তেকাল

দ. প্রতিবেদক
সরকারি বিএল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রফেসর মোঃ বজলুল করিম (বি. করিম) শুক্রবার সকাল ৭ টায় দৌলতপুরের পাবলা ২নং ক্রস রোডের বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি … রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গুণী এই শিক্ষাবিদ এ অঞ্চলের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও বি. করিম স্যার নামেই সর্বাধিক পরিচিত। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রজলাল কলেজের ইতিহাসসহ বহু গ্রন্থের রচয়িতা ও সম্পাদনার সাথে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।
প্রফেসর মোঃ বজলুল করিম ১৯৩৮ সালের ১১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর মহকুমার করিমপুর থানা চেচানিয়া দেওয়ানের পাড়া গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- রফিজ উদ্দিন বিশ্বাস ছিলেন রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা এবং মা বিধুজান নেছা (নক্সীকাঁথা শিল্পী) গৃহিনী। প্রাথমিক শিক্ষা জীবন মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ায়। কুষ্টিয়ার জেলার খাস মথুরাপুর হাই স্কুল থেকে তিনি এসএসসি, কুষ্টিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৭ সালে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৫৯ সালে এমএ (দর্শন) ডিগ্রি লাভ করেন। ময়মনসিংহ, মাদারিপুর নাজিমউদ্দিন কলেজ ও পরবর্তীতে খুলনা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ে এবং ১৯৬২ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত সরকারি বিএল কলেজে দর্শন বিভাগে অধ্যাপনা করেন তিনি।
অধ্যাপনার সুবাদে সাবেক ইউওটিসি’র সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সামরিক বিভাগে শুধু কমিশনপ্রাপ্ত হননি; সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট থেকে ক্রমান্বয়ে বিএনসিসি’র মেজর পদ মর্যাদা লাভ করেন। অবসর নিয়েই বসে থাকেননি তিনি। ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত খুলনা জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত সাদামাটা জীবন-যাপন করেছেন এই খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ। সহধার্মিনী লায়লা আরজুমান্দ’র অনুপ্রেরণায় নগরীর দৌলতপুরের পাবলা ২নং ক্রস রোডের বাসভবনে অবিরত লিখে গেছেন নানান বিষয়ে। বড় ছেলে রানা এজাজ করীম প্রবাসী এবং ছোট ছেলে জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক রুমি রিজভী করিম ও একমাত্র মেয়ে সংগীত শিল্পী সুষমা স্নিগ্ধা স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত।
বি করিম স্যারের রচিত বইয়ের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল- আধুনিক যুক্তিবিজ্ঞানের রূপরেখা (অনার্স শ্রেণির জন্য), অস্তিত্ববাদ ও মানবতাবাদ (অনার্স শ্রেণির জন্য), উচ্চ মাধ্যমিক সহজ যুক্তিবিদ্যা, অবরোহ ও আরোহ খন্ড, হেগেলোত্তর দর্শন (অনার্স এবং স্নাতকোত্তর শ্রেণির জন্য), অনার্স শ্রেণির জন্য উচ্চতর যুক্তিবিজ্ঞানের ভূমিকা (প্রতীকী), ব্রজলাল (বিএল) কলেজের ইতিহাস, ইতিহাস ও ঐতিহ্যে খুলনার দৌলতপুর, শিক্ষা ও প্রশাসনে মন্দির-মসজিদের ভূমিকা, পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস-সমকালীন (সহযোগী লেখক), কালা মিয়’র ঘাট ও বরেণ্য ব্যক্তিত্ব (সহযোগী লেখক), বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর বিবর্তণের ধারায়, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরকে যেমন দেখেছি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রকৌশলী এসএম শহীদুল্লাহ : জীবন ও কর্ম, বিএল কলেজের অর্ধশতাব্দী (১৯০২-১৯৫২), পৃথিবীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মেষ ও বিকাশ ও অলিম্পিক ও ফুটবলের সন্ধানে এবং শৈল্পিক ফুটবলে ‘রুমী-রা’।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *