April 20, 2024
জাতীয়

সত্যকে আড়াল করতে পারবেন না, তথ্যমন্ত্রীকে রিজভী

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দেশে দুর্নীতির মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। স¤প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ‘দুর্নীতির ধারণাসূচকে’ বাংলাদেশের ছয় ধাপ অবনমন নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের তিনি বলেন, “গতকাল তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট বিএনপির আমলে সঠিক ছিল, এখন মনগড়া। বাহ! বাহ!
তাহলে বিএনপি আমলের জলবায়ুরও কী পরিবর্তন হয়েছে গেছে? বর্ষাকালে বর্ষা হয় না, শীতকালে শীত পড়ে না, বসন্তকালে কোকিল ডাকে না। বিএনপির আমলে ডাকত এখন ডাকে না? তার কথাতে আমার এটাই মনে হচ্ছে। একই প্রতিষ্ঠান বিএনপির আমলে যেটা বলেছে সেটা সঠিক, এখন সেটা বেঠিক হয়ে গেল।
রিজভী বলেন, আসলে তথ্যমন্ত্রী এখন যেন তথ্যযন্ত্রীতে পরিণত হয়েছেন। তিনি তার তথ্যযন্ত্রের মাধ্যমে এমন আজগুবি তথ্য দেন, ততে শুধু দেশবাসীই নয়, আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ও বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতির মাত্রা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত বলে সব তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে না। কেবল টিআইই নয়, ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি গত সোমবার বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
সেখানে দেখা গেছে, শুধু ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর গত ১০ বছরে পাচার হয়েছে পাঁচ লাখ ত্রিশ হাজার কোটি টাকা। এই দুর্নীতির টাকা আওয়ামী ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকেরাই পাচার করেছে। সুতরাং তথ্যমন্ত্রী গণমাধ্যমকে ডেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সত্যকে আড়াল করতে পারবেন না।
বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনালের দুর্নীতির ধারণাসূচকে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ছয় ধাপ অবনমন ঘটেছে। সূচকের ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভাল থেকে খারাপ) বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৪৯ নম্বরে। গতবার ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৩ নম্বরে।
আবার অধঃক্রম অনুযায়ী (খারাপ থেকে ভালো) বিবেচনা করলে বাংলাদেশ আগের ১৭তম অবস্থান থেকে নেমে গেছে ১৩তম অবস্থানে। ১০০ ভিত্তিতে এই সূচকে বাংলাদেশের স্কোর এবার ২ পয়েন্ট কমে ২৬ হয়েছে। এই স্কেলে শূন্য স্কোরকে দুর্নীতির ব্যাপকতার ধারণায় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ১০০ স্কোরকে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত বা সর্বোচ্চ সুশাসনের দেশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ টিআইয়ের এই প্রতিবেদনকে উদ্দেশ্যমূলক বলেছেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ভুয়া ভোটের সরকার আরো জোরালোভাবে রাষ্ট্রের আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগকে একই কেন্দ্রের অধীনে করল। রাষ্ট্রের ক্ষমতার ভারসাম্য ক্ষয় হতে হতে এখন ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বিরোধী দল, মত ও বিশ্বাসের ওপর চলছে টার্গেট দমন-পীড়ন। নাগরিকদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ সংকুচিত হতে হতে এখন নিঃশেষিত হয়ে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্বে এসে উপনীত হয়েছে।
রাষ্ট্রের মেশিনারিজ ভুয়া ভোটের সরকারের অনুকূলে এখন বিভৎস চেহারায় জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ‘এক ব্যক্তি, এক দল’ নীতির বেপরোয়া আস্ফালন জনগণকে আতঙ্কিত করে রেখেছে। জনগণকে পরাধীন করে এখন আওয়ামী লীগ উপনিবেশ কায়েম করেছে।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সাহিদা রফিক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *