April 20, 2024
আন্তর্জাতিক

রাশিয়ায় মাটি খুঁড়ে মিলল বরফ যুগের লোমশ গণ্ডার

রাশিয়ার সুমেরু অঞ্চলে স্থানীয়রা মাটি খুঁড়ে বরফ যুগের একটি লোমশ গণ্ডারের দেহাবশেষের সন্ধান পেয়েছেন। গবেষকদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

উত্তর-পূর্ব রাশিয়ার ইয়াকুতিয়ার আবিস্কি অঞ্চলের বরফে জমাটবাধা মাটি গলে যাওয়ার ফলে গণ্ডারটি বেরিয়ে পড়ে। গণ্ডারটির দেহের ভেতরকার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রায় সবই অক্ষত রয়েছে। এই অঞ্চলে এখন পর্যন্ত যেসব পশুর দেহাবশেষ পাওয়া গেছে তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভালোভাবে সংরক্ষিত ছিল।

বিশেষজ্ঞরা আগামী মাসে আরও পরীক্ষার জন্য গণ্ডারটি গবেষণাগারে পাঠাবেন। তারা এখন বরফের রাস্তা গড়ে ওঠার অপেক্ষা করছেন যেন ইয়াকুৎস শহরে গণ্ডারটি নিয়ে যাওয়া যায়। সেখানে বিজ্ঞানীরা এটির নমুনা সংগ্রহ করে রেডিওকার্বন বিশ্লেষণ করবেন।

গণ্ডারটি প্লাইস্টোসিন যুগের শেষের দিকে, অর্থাৎ ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার বছর আগের সময়ের বলে ধারণা করা হচ্ছে। গণ্ডারটি পরীক্ষা করে দেখেছেন গবেষক ভ্যালেরি প্লৎনিকভ। রুশ মিডিয়াকে তিনি বলেন, গণ্ডারটি যখন মারা যায় তখন এর বয়স তিন থেকে চার বছর ছিল। পানিতে ডুবে এটির মৃত্যু হয়েছিল বলে ধারণা করছেন তিনি।

তিনি বলেন, গণ্ডারটির নরম টিস্যু এখনো দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে নাড়ি ও জননাঙ্গের টিস্যুও রয়েছে।

ইয়াকুতিয়া ২৪ টিভিকে রাশিয়ান অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের গবেষক প্লৎনিকভ বলেন, ‘নাকের ছোট একটি শিং এখনো অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। এটা একটা ব্যতিক্রমী ব্যাপার, কারণ এই জিনিসটি দ্রুত পচে যায়।’

তিনি আরও বলেন, শিংয়ে দাগ রয়েছে। এর মানে হল গণ্ডারটি সক্রিয়ভাবে খাবার খুঁজছিল।

গণ্ডারটি গত আগস্টে এক স্থানীয় ব্যক্তির দ্বারা তিরেখতিয়াখ নদীর তীরে প্রথম আবিষ্কৃত হয়। এই জায়গার কাছাকাছি একটি জায়গায় ২০১৪ সালে আরেকটি অল্প বয়সী লোমশ গণ্ডার পাওয়া গিয়েছিল। গবেষকরা গণ্ডারটির নাম দিয়েছিলেন সাশা। এটি ৩৪ হাজার বছর আগের বলে ধারণা করা হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে সাইবেরিয়া অঞ্চলে বেশ কয়েকটি প্রাচীন কালের পশুর দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ম্যামথ, লোমশ গণ্ডার, ঘোড়া-শাবক, কুকুরছানা, ও গুহাবাসী সিংহের দেহাবশেষ। বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে রাশিয়ার একদম উত্তর ও পূর্ব অঞ্চলের জমাটবাধা ভূমি গলে যাওয়ার ফলে এ ধরনের দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *