April 10, 2024
আঞ্চলিকজাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

রহিমা বেগমকে ফরিদপুর থেকে জীবিত উদ্ধার

খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে নিখোঁজ মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজের ২৯ দিন পর তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে কেএমপির দৌলতপুর থানা পুলিশ অভিযানে যান। সেখানে গিয়ে তাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। রহিমা বেগমকে নিয়ে খুলনার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। রাতেই তারা খুলনা পৌঁছাবে। তাকে নিয়ে এলে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো যাবে।

এ বিষয়ে ফরিদপুর বোয়ালমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওয়াহাব ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে কেএমপির একটি দল বোয়ালমারী পৌরসভাধীন সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমা বেগমকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন। রাতেই পুলিশ রহিমাকে নিয়ে খুলনার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছে।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, রাহিমা বেগমকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে ছিলেন। কুদ্দুস মোল্লা সোনালী জুট মিলে চাকরিরত অবস্থায় রহিমা খাতুনের মহেশ্বরপাশার বাড়িতে ভাড়া ছিলেন। তিনি বর্তমানে অসুস্থ। রহিমা খাতুনকে নিয়ে খুলনার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তিনি। পরে গণমাধ্যমে সব কিছু জানানো হবে।

এর আগে শুক্রবার সকালে নিখোঁজ মা রহিমা বেগমের সন্ধানে ময়মনসিংহে যায় মরিয়ম ও তার পরিবারের সদস্যরা। সকালে কাপড় দেখে মায়ের লাশ দাবি করেছেন মরিয়ম। তবে পুলিশ বলেছিল ডিএনএ টেস্ট ছাড়া লাশ চূড়ান্ত শনাক্ত করা সম্ভব নয়।

এদিকে শনিবার রাতে রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, মাকে উদ্ধারের খবর পেয়েছি। আমার থেকে খুশি এই মুহূর্তে কেউ নেই। আমি এই মুহূর্তে খুলনা যাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে নিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এরপর আর ঘরে ফেরেননি তিনি। স্বামী ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে তার ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। সেই রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা।

রহিমার ছয় সন্তান কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কখনো মাইকিং, কখনো আত্মীয়স্বজনদের দ্বারস্থ হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনের পর মাকে খুঁজে পেতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানায় মামলাও দায়ের করেন। মামলার বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআই তদন্তের ভার পায়। ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত ২৭ আগস্ট নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ির সামনে থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হয়-এ অভিযোগ তুলে তার মেয়ে আদুরি আকতার বাদী হয়ে পরদিন দৌলতপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত ৬ জন আটক হয়েছেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *