May 10, 2024
জাতীয়

যশোরের সেই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

যশোরের শার্শা থানার এসআই খায়রুল ইসলামসহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী নারীকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার যশোর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আরিফ আহমেদ  বলেন, ওই নারীর মেডিকেল পরীক্ষায় শারীরিক সম্পর্কের আলামত পাওয়া গেছে। সিমেন মিলেছে। এখন ডিএনএ টেস্টের পর জানা যাবে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা জড়িত কিনা।

আগের দিন ওই নারীর শারীরিক পরীক্ষার আগে এই চিকিৎসক বলেছিলেন, তার শরীরের আঁচরের চিহ্ন দেখা গেছে। ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এসআই খাইরুল প্রত্যাহার করা হলেও তাকে বাদ দিয়ে অজ্ঞাতনামা একজনসহ চারজনকে আসামি করে এঘটনায় মামলা করা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার শার্শার আমলি আদালতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হয় বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শার্শা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদ ভুইয়া জানান। আদালত আগামী ৮ সেপ্টেম্বর আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছে।

গত মঙ্গলবার সকালে যশোর সদরে হাসপাতালে ৩০ বছর বয়সী ওই নারীর কাছ থেকেই ধর্ষণের অভিযোগের বিষয়টি সাংবাদিকরা জানতে পারেন। তার অভিযোগ, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এসআই খায়রুল তার গ্রামের তিনজনকে নিয়ে তার বাড়িতে দরজা খুলতে বলেন।

তিনি বলেন, তিনি খাইরুলের সঙ্গে তার গ্রামের দুজনকে দেখে দরজা খোলেন। খায়রুল ও তার গ্রামের কামারুল ঘরে ঢোকেন। মাদকের মামলায় আটক তার স্বামীকে জামিনের বিনিময়ে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন খায়রুল। তিনি রাজি না হলে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে খায়রুল ও কামারুল তাকে ধর্ষণ করেন। এসময় লতিফ ও কাদের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

তবে শার্শা থানার ওসি মশিউর রহমানের ভাষ্য, ওই নারীর অভিযোগের পর চারজনকেই তার সামনে হাজির করা হলে তিনি এসআই খায়রুল ছাড়া বাকি তিনজনকে তিনি শনাক্ত করেন। তবে এরপর ওই নারী বা তার স্বজনের কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।

বুধবার দুপুরে যশোরের সংবাদকর্মীরা নির্যাতিত ওই নারীর বাড়ি গিয়ে জানতে পারেন, কিছু সময় আগে পুলিশ সদস্যরা তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়। কিন্তু এরপর থেকেই ওই নারীকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। পুরো গ্রাম খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এসব বিষয়ে ওই নারীর প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা পুলিশের হয়রানির ভয়ে কথা বলতে চাননি। তবে দুই একজন বলেছেন, নির্যাতিত ওই নারীর স্বামী খুবই সাধারণ একজন মানুষ। অহেতুক পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। এসআই খায়রুল আলমের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ করেন এলাকার কেউ কেউ।

এদিনই এসআই খায়রুলকে প্রত্যাহারের খবর জানান যশোর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহ উদ্দিন শিকদার। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত চলছে, অজ্ঞাত ব্যক্তিটি যদি পুলিশও হয় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবারও নারীর গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ধর্ষণের ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাসহ দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *