April 26, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

মুজিববর্ষে নতুন ঘরসহ জমি পাচ্ছে খুলনার ৯২২ হতদরিদ্র পরিবার

দ. প্রতিবেদক
মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে খুলনার ৯ উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন ৯২২টি পরিবার নান্দনিক ঘর পাচ্ছেন। যাদের জমি এবং বাড়ি কোন কিছুই নেই তাদেরকে সরকারী ব্যবস্থাপনায় ২ শতাংশ খাস জমির বন্দোবস্তসহ দুই ক বিশিষ্ট সেমিপাকা একটি আশ্রয়স্থল তৈরি করে দেয়া হয়েছে। আগামী ২৩ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপকারভোগী পরিবারের কাছে ভূমি ও গৃহ হস্তান্তর করবেন। বঙ্গবন্ধু স্যাটালাইটের মাধ্যমে ডুমুরিয়া উপজেলাকে সংযুক্ত করা হবে।


খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বৃহস্পতিবার দুপুরে তার কার্যালয়ে এক মতবিনিময় ও প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে জানান, মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে সরকার ‘ক’ ক্যাটাগরিতে যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন তাদের এবং ‘খ’ ক্যাটাগরিতে যাদের ভূমি আছে কিন্তু গৃহ নেই তাদের নতুন ঘর তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে।
খুলনার ৯টি উপজেলা থেকে ‘ক’ ক্যাটাগরির অন্তর্ভূক্ত ভূমিহীন এবং গৃহহীন ৫ হাজার ৮৮ টি পরিবারের তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। প্রথমপর্যায়ে ৯২২টি পরিবারকে জমি ও ঘর নির্মাণ করে দিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রূপসা উপজেলায় ৭২টি, তেরখাদায় ৪০টি, দিঘলিয়ায় ৭০টি, ফুলতলায় ৪০টি, ডুমুরিয়ায় ১৪০টি, বটিয়াঘাটায় ১৫০টি, দাকোপে ১৪০টি, পাইকগাছায় ২২০টি ও কয়রায় ৫০টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প আশ্রয়ণ-২-এর আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে কমপে দুই শতক খাস জমির বন্দোবস্তসহ দুই কবিশিষ্ট সেমিপাকা গৃহনির্মাণ করে দেওয়ার এসব কাজ ৯৮ ভাগ শেষ হয়েছে। বর্তমানে চলছে রং এর কাজ।
সরকারের মহতী এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে স্ব স্ব উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় সরকারি ভূমি উদ্ধার ও ঘরের স্থান নির্ধারণসহ এসব ঘর নির্মাণে তদারকির জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন উপজেলাগুলোর ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভূমি), প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আমিসহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জিয়াউর রহমান, স্থানীয় সরকার দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ইকবাল হোসেনসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা ঘর তৈরি কার্যক্রম ও অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শন এবং সুবিধাভোগীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। ইতিমধ্যে রূপসা উপজেলায় নির্মাণাধীন ঘর সরেজমিন পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-১৩ (পরিবহণ) মেজর মোঃ ফরিদুল ইসলাম (পিএসসি)। স্থানীয় প্রশাসনের নিবীড় তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠছে আশ্রয়হীন মানুষের এসব স্বপ্নের ঠিকানা। গৃহহীনরা তাদের স্বপ্নের পূর্ণতা পাওয়ার অপোর প্রহর গুনছে।
প্রতিটি গৃহনির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। সে হিসেবে ঘর নির্মাণে মোট ব্যয় হচ্ছে ১৫ কোটি ৭৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা। প্রতিটি গৃহে ইটের দেয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি দুটি ক, একটি রান্না ঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা থাকবে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ছিন্নমূল ও ভূমিহীন পরিবারের তথ্য স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে যাচাই করে নিশ্চিত হওয়ার পরেই সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ‘ক’ শ্রেণির ৫০৮৮ টি পরিবারের মধ্যে প্রথমপর্যায়ে ৯২২ টি পরিবারের জন্য তৈরিকৃত ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জিয়াউর রহমান।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আরও জানান, মুজিববর্ষ উপলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন রয়েছে তাদেরকে ঘর তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। খুলনা জেলায় ৯২২টি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গুণগতমান যথাযথ বজায় রেখে দিক নির্দেশনা অনুযায়ী ঘরগুলোর নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একই সাথে যারা উপকারভোগী আছে তাদের সাথেও মতবিনিময় করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গৃহহীনদের একটা মানসম্মত ও টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য আমরা সর্বণ তদারকি করেছি।
রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন আক্তার জানান, কাজের গুনগত মান শত ভাগ বজায় রেখে মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার সমাজের নিম্ন আয়ের ভূমিহীন পরিবারগুলোর (প্রতিবন্ধী, হরিজন, দলিত, ভ্যান চালক) কাছে যথাযথভাবে বুঝিয়ে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর এবং তাদেরকে সরকারের মাধ্যমে একটা সেরা উপহার দিতে পারলে আমরা গর্বিত।
মতবিনিময় ও প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার জিনাত আরা আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জিয়াউর রহমান, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম জাহিদ হোসেন, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুন্সী মাহবুব আলম সোহাগ, খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক মকবুল হোসেন মিন্টুসহ সরকারি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *