May 9, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্ট

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক কপিলমুনিতে আসছেন আগামীকাল

পাইকগাছা প্রতিনিধি

আগামীকাল ৯ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্ত দিবস উপলক্ষে খুলনার পাইকগাছাতে আসছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সফরকালে মন্ত্রীর সঙ্গে এলাকার দুই কৃতি সন্তান জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ সরকারের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। মন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে উপজেলার কপিলমুনিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রীর সফরসূচী হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী।

ইউএনও খালিদ হোসেন জানান, এদিন মন্ত্রী ঐতিহাসিক যুদ্ধক্ষেত্র কপিলমুনিতে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স এর শুভ উদ্বোধন করবেন। এছাড়া মন্ত্রী মহোদয় কপিলমুনি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তর্বক অর্পন, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে রাজাকার ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর বসতবাড়ি পরিদর্শন করবেন। বিকাল ৩টায় কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দির মাঠে কপিলমুনি মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। এছাড়াও মন্ত্রী ঐতিহ্যবাহী মাহমুদকাটী অনির্বাণ লাইব্রেরী পরিদর্শন করবেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিতে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিলো রাজাকার বাহিনী। যুদ্ধ শেষে মুক্তিযোদ্ধারা আটক করেন ১৫৫ জন রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধীকে। রাজাকার ঘাঁটি থেকে উদ্ধারকৃত বিভিন্ন কাগজপত্রের সাথে পাওয়া যায় রাজাকারদের হাতে লেখা এক হাজার ৬০১ জন শহীদের তালিকা। রাজাকারদের পরবর্তী টার্গেট হিসেবে এলাকার সহ¯্রাধিক বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের তালিকা পাওয়া যায়। আর পাওয়া যায় দেয়ালে পেরেকবিদ্ধ সৈয়দ আলী গাজীর ঝুলন্ত মৃতদেহ। এই খবরে ফুঁসে ওঠে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। এদিনই কপিলমুনি হাই স্কুল মাঠেই বসে জনতার আদালত। গণআদালতের রায়ে মৃত্যুদÐ কার্যকর করা হয় ১৫১ জন রাজাকারের। মুক্তিযুদ্ধকালে গণআদালতের রায়ের মাধ্যমে এক সঙ্গে দেড় শতাধিক রাজাকারের শাস্তি দেওয়া মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক একটি ঘটনা। অথচ স্বাধীনতা যুদ্ধের এই ঐতিহাসিক ঘটনার যথাযথ স্বীকৃতি মেলেনি এবং সেখানকার স্মৃতি সংরক্ষণে তেমন কোন কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। দীর্ঘ প্রতিক্ষারপর হলেও এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার কপিলমুনি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং গণআদালতের রায় কার্যকরের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, স্থানীয় এমপি, এলাকার দুই সচিব সহ স্থানীয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *