May 17, 2024
জাতীয়

বুলবুলে ২৬৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি : কৃষিমন্ত্রী

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ৭২ হাজার ২১২ টন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য ২৬৩ কোটি পাঁচ লাখ টাকা। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য জানিয়েছেন।

গত রোববার ভোররাতে বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৬টি জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। জেলাগুলো হচ্ছে- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং ল²ীপুর।

ঝড়ের পরপরই ফসলের ক্ষক্ষতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া না গেলেও কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর ১৬ জেলার দুই লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছিল, যার মধ্যে রোপা আমন, খেসারি ও পানের বরজসহ রবি শস্য ও শীতকালীন সবজি রয়েছে । সংবাদ সম্মেলনে একই তথ্য দেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

১৬ জেলার ১০৩ উপজেলায় ঝড়ের প্রভাব পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক আক্রান্ত ফসলি জমির পরিমাণ দুই লাখ ৮৯ হাজার ছয় হেক্টর (মোট আবাদকৃত জমির ১৪%) এবং ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ২২ হাজার ৮৩৬ হেক্টর (মোট আক্রান্ত জমির ৮%)।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ৫০ হাজার ৫০৩ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আক্রান্ত ফসলগুলো হচ্ছে রোপা আমন, শীতকালীন সব্জি, সরিষা, খেসারি, মসুর ও পান। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ ৭২ হাজার ২১২ টন।

ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির মধ্যে রোপা আমনের দুই লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৮ হেক্টর, সরিষার এক হাজার ৪৭৬ হেক্টর, শীতকালীন সবজির ১৬ হাজার ৮৮৪ হেক্টর, খেসারির ৩১ হাজার ৮৮ হেক্টর, মসুরের ১৯৫ হেক্টর, পানের দুই হাজার ৬৬৩ হেক্টর এবং অন্যান্য তিন হাজার ১২৬ হেক্টর জমি রয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।

ধানে কি পরিমাণ ক্ষতি হবে জানতে চাইলে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, অনুমান করছি ৪৭ কোটি টাকা রোপা আমনে এবং৭৯ কোটি টাকা সবজিতে ক্ষতি হবে।

ঘূর্ণিঝড়ে ফসলের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে বাজারে তেমন প্রভাব পড়বে না জানিয়ে মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত বোরো ও আমন মৌসুমে অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছিল। এবার আমন মাঠে যে ফসল আছে, ধান কাটা কেবল শুরু হয়েছে। আমার আশা করছি খুব ভালো ফলন হবে। এছাড়া এবার ধানে চিটা কম হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়ার পর দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কৃষি পুনর্বাসন শুরু হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

আর্থিক বরাদ্দের পরিমাণ এবং কবে নাগাদ তা দেওয়া হতে পারে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সরিষা পুনর্বাসন করা যাবে, বিএডিসির কাছে বীজ আছে, সরিষা বা খেসারি তারা আবার করতে পারবে। দক্ষিণাঞ্চলে শীতকালীন সবজিও খুব কম হয়। চুলচেরা হিসাব করার পর জানানো যাবে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।

এবার ঘূর্ণিঝড়ে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় যেমনটা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতি আরও বেশি হতে পারত, কৃষিতে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা তৎপর রয়েছি।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *