May 19, 2024
জাতীয়

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার প্রথা যুক্তিসঙ্গত নয়: বিসিআই

প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার প্রথা অব্যাহত রয়েছে যা যুক্তিসঙ্গত নয়। কালো টাকা উর্পাজন এবং এর ব্যবহার অন্যায়, অবৈধ কাজ। এতে বৈধ অর্থ উপার্জনকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। পাশাপাশি বাজেটে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছে তা অনেক উচ্চাভিলাষী। এটা বাস্তবভিত্তিক হওয়া প্রয়োজন।

করোনা (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি মোকাবিলায় আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। গণমাধ্যমে পাঠানো বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা জানায় বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে, ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয় সীমা ৩ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। সর্বনিম্ন কর ৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ করের সীমা ২৫ শতাংশ করায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানায় যা বিসিআই’র বাজেট প্রস্তাবের প্রতিফলন। করপোরেট কর কমানোর কারণে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কিছুটা লাভবান হবে নিঃসন্দেহে তবে করোনা পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি টিকে থাকার জন্য শিল্প ক্ষেত্রে করপোরেট করের হার হ্রাস করার করার অনুরোধ করছি। ভ্যাট রিটার্ন পদ্ধতি সম্পূর্ণ অনলাইন করা, রিফান্ড পদ্ধতি সহজীকরণ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনের ধারা অনুযায়ী ভ্যাট, শুল্ক ও অগ্রীম কর ২ মাসের মধ্যে রিফান্ড করার প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল ও উপকরণ আমদানি করার ক্ষেত্রে অগ্রীম করের পরিমাণ ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ ও অগ্রীম কর সমন্বয় করার জন্য দুই কর মেয়াদের পরিবর্তে চার কর মেয়াদে সমন্বয় করার সুযোগ দেওয়ার হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। বিসিআই কাঁচামাল ও উপকরণ আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম কর প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করছে। বাজেটে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছে তাও অনেক উচ্চাভিলাষী বলে মনে হয় এটা আরও বাস্তবভিত্তিক হওয়া প্রয়োজন।

প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, বাজেট ঘাটতি ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এ ঘাটতি পূরণে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের কথা বলেছে। সরকার যদি ব্যাংক খাত থেকে এ পরিমাণ ঋণ নেয়, তাহলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এছাড়া পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বাজেটের ১১ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা এই মুহূর্তে জরুরি নয় এ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ গ্রামীণ অর্থনীতি সচল করে এমনসব প্রণোদনা প্যাকেজ অন্তর্ভুক্ত হলেই বেশি জনকল্যাণমূখী হতো।

করোনার কারণে অনেকে এখন শহর থেকে গ্রামে চলে যাচ্ছে। গ্রামীণ বেকারত্ব দূরীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এখন বেশি প্রয়োজন সেদিকে নজর দিয়ে কৃষি ও কুটির শিল্প নির্ভর গ্রামীণ অর্থনৈতিক কার্যক্রম সক্রিয় করার লক্ষ্যে বিশেষ স্কিম নেওয়া যেতে পারে। আর্থিক প্রণোদনাসহ করোনা স্বাস্থ্য ঝুঁকি সময় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে প্রণোদনা অনেক বেশি গ্রামীণ অর্থনীতিতে রক্ত সঞ্চালন করবে।

বিসিআই সভাপতি বলেন, কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বেকারত্বের হার বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষে বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখার অনুরোধ করছি। বর্তমান বাজেটে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় থাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। এই অর্থ ব্যয় ন্যায্যভিত্তিক ও বিচক্ষণতার সহিত করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যখাতের ব্যবস্থাপনায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাকে বেশি অগ্রাধিকার দিতে সরকারি ও বেসরকারি উভয় সেক্টরকে সম্পৃক্ত করে একটি অভিন্ন নীতিমালা এনে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের কাছে সহজলভ্য করার বিষয় মাথায় রেখেই এ খাতে বরাদ্দ সুচারুরূপে ব্যয় করতে হবে বলে বিসিআই বিশ্বাস করে।

শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বাজেটের ১৫ দশমিক ১ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত ভোকেশনাল ট্রেনিং স্কুল প্রতিষ্ঠা ও প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়ার মাধ্যমে দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তোলা প্রয়োজন যাতে বৃহৎ ক্ষুদ্র ও মাঝারি কল কারখানার কর্মীদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয় এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। বাজেটে অর্থ ব্যয়কালে এ বিষয়ে স্পষ্ট রূপরেখা থাকা প্রয়োজন বলে বিসিআই মনে করে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *