May 3, 2024
আঞ্চলিকবিজ্ঞপ্তিলেটেস্টশিক্ষা

বঙ্গমাতা সর্বদা বঙ্গবন্ধুকে সময়োচিত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন : খুবি উপাচার্য

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী, মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রবিবার বেলা ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত বঙ্গমাতার ম্যুরালে উপাচার্যের নেতৃত্বে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। পরে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, খোকা থেকে মুজিব ভাই, মুজিব ভাই থেকে বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হয়ে ওঠার পিছনে বঙ্গমাতার ত্যাগ ও অবদান ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মহীয়সী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সর্বদা বঙ্গবন্ধুকে সময়োচিত সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে বিভিন্ন সংকটময় মুহূর্তে তিনি প্রেরণা যুগিয়েছেন। বঙ্গমাতার নেপথ্য ভূমিকা ও দূরদর্শিতার ফলশ্রুতিতে আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন এবং একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র লাভ করি। তিনি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন পর্বে বঙ্গমাতা নীরব ও সরব সাংগঠনিক ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর সহচর নেতাকর্মীদেরও নানাভাবে সহায়তা করেছেন। তাই আমাদের মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি বঙ্গমাতার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ জেলজীবনে তিনি একদিকে সংসার সামলিয়েছেন, অন্যদিকে দলের নেতাকর্মীদের সঠিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ৭ মার্চের ভাষণ দেওয়ার ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুকে দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই নানা পরামর্শ দিয়েছিলেন। এ নিয়ে বঙ্গবন্ধু অনেকটা বিচলিত, চিন্তিত এবং দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছিলেন। কিন্তু বঙ্গমাতার উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা, দূরদর্শিতা ও সঠিক পরামর্শের কারণেই ৭ মার্চে অবিচল থেকে বঙ্গবন্ধু তাঁর হৃদয় থেকে উৎসারিত ঐতিহাসিক ভাষণ দিতে পেরেছিলেন। যে ভাষণ আজ বিশ্ব সেরা, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গমাতা মানবিক গুণাবলীতে উদ্ভাসিত ছিলেন। তিনি মাওলানা ভাসানীকে টাঙ্গাইলের সন্তোষ থেকে ঢাকায় এনে চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করার বিষয়ে বঙ্গবন্ধুকে উদ্বুদ্ধ করেন। এমনকি তিনি ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর থেকে তাঁর জন্য হাসপাতালে রান্না করা খাবার পাঠিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু জেলে থাকাকালীন দলের বহু নেতাকর্মীকে আর্থিক সহায়তা করেন। এমনকি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে এবং পারিবারিক সংকটে তিনি তাঁর সোনার গহনা বিক্রি করে সহায়তা করেছিলেন। বঙ্গমাতার জীবনী আলোচনা করলে দেখা যায়- বঙ্গবন্ধুর জীবনসঙ্গী হিসেবে সকল প্রতিকূল অবস্থায় তিনি সাথে ছিলেন। একনিষ্ঠভাবে পারিবারিক ভূমিকা পালনের সাথে সাথে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। তিনি এই মহীয়সী নারীর ৯১তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন তাঁর অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা ও ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ। হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. আয়েশা আশরাফের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুলের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের পরিচালক, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্ট, সংশ্লিষ্ট হলের সহকারী প্রভোস্ট ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *