April 25, 2024
জাতীয়

ফেনীর নুসরাত হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী রানা গ্রেপ্তার

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। গ্রেপ্তার ইফতেখার উদ্দিন রানা (২১) ওই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীদের একজন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।

পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈনউদ্দিন জানান, শনিবার ভোর রাতে রাঙামাটি সদরের টিঅ্যান্ডটি আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোনাগাজীর চরগনেশ এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে রানা ওই হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে রাঙামাটি চলে গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।

পিবিআই কর্মকর্তা মঈনউদ্দিন বলেন, নুসরাত পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় তাই ভাই যে মামলা করেছেন সেখানে ইফতেখার উদ্দিন রানার নাম নেই। তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতার তথ্য বেরিয়ে আসে।

কারাগারে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার সঙ্গে দেখা করে আসার পর তার অনুসারীরা হোস্টেলে যে বৈঠকে বসে নুসরাতকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন, সেই বৈঠকে ছিলেন ইফতেখার রানা।

রানাকে শনিবার ফেনীতে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, রোববার এই আসামিকে আদালতে হাজির করা হবে। সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা থেকে এ বছর আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন নুসরাত। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি।

গত ২৬ মার্চ নুসরাতের মা শিরীনা আক্তার মামলা করার পরদিন সিরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই মামলা প্রত্যাহার না করায় ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে মাদ্রাসার একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয় বোরকা পরা কয়েকজন। আগুনে শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, আগুন দেওয়ার সময় প্রথমে চারজনের নাম পাওয়া গেলেও তদন্তে তারা নিশ্চিত হন যে সেখানে পাঁচজন ছিল।

ওই পাঁচজন হলেন- শাহাদাত হোসেন শামীম, যোবায়ের আহমেদ, জাবেদ হোসেন, অধ্যক্ষের ভায়রার মেয়ে উম্মে সুলতানা পপি ও কামরুন নাহার মণি। নুসরাতের সহপাঠী পপি ও মনিও এবার ওই মাদ্রাসা থেকে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

ওই পাঁচজনসহ মোট ১৭ জনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামি নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে পুরো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

সেই জবানবন্দি অনুযায়ী ৪ এপ্রিল রাতে এক গোপন বৈঠকে নুসরাতকে হত্যার পরিকল্পনা হয়। রাঙামাটি থেকে গ্রেপ্তার ইফতেখার উদ্দিন রানাও উপস্থিত ছিলেন ওই বৈঠকে। আর হত্যাকাণ্ডের দিন পপি কৌশলে নুসরাতকে ডেকে ছাদে নিয়ে গেলে আরও কয়েকজনের সঙ্গে গেইটে পাহারায় ছিলেন রানা।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশেই নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার পরিকল্পনা করার কথা জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন আসামি নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *