প্রজেক্ট উই এর ভিন্নধর্মী আয়োজন
রেজওয়ান আহম্মেদ, খুবি
নারী মানে মা, নারী আমাদের শক্তি। প্রতিটি উন্নত দেশের উন্নয়নের পেছনে কাজ করে নারী-পুরুষের সম্মিলিত চেষ্টা। দিন বদলেছে কিন্তু বাংলাদেশের নারীরা আজও আর্থসামাজিক উন্নয়ন সূচকে পিছিয়ে রয়েছে। যা নারীদের জন্য অনেক বড় একটি বাধা। এই বাধাকে পেছনে ফেলে সামনে অগ্রসর হবার প্রত্যয় নিয়ে আয়োজিত হয়ে গেল প্রজেক্ট উই এর পরিচালনায় ‘রেনেসাঁস সিজন ১’।
‘রেনেসাঁস’ শিরোনামের অনলাইন ভিত্তিক এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিযোগীরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন নারীর আর্থ-সামাজিক সমস্যার দারুণ সব সমাধান। এই প্রতিযোগিতাটির মূল লক্ষ্য ছিল নারীর আর্থ-সামাজিক সমস্যাগুলো খুঁজে বের করা এবং এর সমাধান সমাজের প্রেক্ষাপটের সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে যৌক্তিকভাবে তুলে ধরা।
নারী বিষয়ক সংস্থা ‘প্রজেক্ট উই’ এই প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করে। এই আয়োজনের প্রথম রাউন্ডে জমা পড়ে প্রায় ১৫০টি আইডিয়া। প্রতিযোগিতাটি মূলত ২টি রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়। ১ম রাউন্ডে নারীদের আর্থসামাজিক একটি সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধান সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত আইডিয়া জমা দিয়েছিলেন প্রতিযোগীরা। প্রাপ্ত আইডিয়া বিচারের মাধ্যমে নির্বাচিত সেরা ৩২টি দল জায়গা করে নেয় ২য় রাউন্ডে। আরো একটি ধাপ অতিক্রম করে ১০ জন প্রতিযোগী জায়গা করে নেয় ২য় রাউন্ডের ২য় পর্বে অর্থাৎ ফাইনাল রাউন্ডে।
গত ২৩ শে জুন সেরা দশটি টিম নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘রেনেসাঁস- সিজন ১’ এর গ্র্যান্ড ফাইনাল। এই অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বনামধন্য পরিচালক অনম বিশ্বাস (দেবী, আয়নাবাজি), সোমি হাসান চৌধুরী (Forbes 30 Under 30), Geoffrey Macdonald (Program Director, IRI), অমিতাভ ঘোষ (প্রোগ্রাম ম্যানেজার, আইআরআই)।
বিচারকেরা উক্ত আয়োজনের ভূয়ষী প্রশংসা করে বলেন, এমন একটি আয়োজন আমাদের সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে খুবই যুগপযোগী একটি উদ্যোগ। এর মাধ্যমে নারীদের আর্থ সামাজিক সমস্যাগুলো যেমন উঠে আসবে, সাথে সাথে তরুণদের মাধ্যমে উঠে আসবে এর সমাধানের পথও।
প্রেজেন্টেশন, প্রশ্ন, নানা রকম কঠিন পরীক্ষা পেরিয়ে অবশেষে ‘রেনেসাঁস- সিজন ১’ এর বিজয়ীর জায়গা অর্জন করেন ‘প্রমিতি কর্মকার’। চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তিনি ‘রেনেসাঁস- সিজন ১’ এর খেতাব এবং আরো জিতে নিয়েছেন ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট, আকর্ষণীয় বই এবং বিজয়ীর এলাকার ৫০ জন পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য এক মাসের সুরক্ষা সামগ্রী। প্রতিযোগিতার স্পন্সর হিসেবে ছিলো দাঁড়িকমা প্রকাশনী, আউটরিচ পার্টনার হিসেবে যুক্ত ছিলো ণড়ঁঃয Youth Opportunities এবং ইউথ পার্টনার হিসেবে ছিলো Plouton, Shadhin Bangla Foundation ও পাঠশালা।
নারীদের নিরাপত্তা, নারীদের প্রতিবন্ধকতাসমূহ, নারী বৈষম্য রোধ, নারী শিক্ষা, নারী স্বাস্থ্য ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে চলেছে বি-রেডি এর সংগঠন প্রজেক্ট উই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রজেক্ট উই এই প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করে। প্রজেক্ট উই কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, নারীদের জন্য, নারীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্যই আমাদের এই কাজ। যতো দিন না আমারা নারীদের সমাজের চোখে একজন ‘সাধারণ মানুষ’ হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিতে সক্ষম হচ্ছি, আমরা কাজ করে যাবো। কারণ আমরা বিশ্বাস করি এই সমাজের উন্নয়ন আসবে নারী পুরুষ এর হাতে হাত রেখে। আমরা স্বপ্ন দেখি সেই সোনালী বাংলাদেশ এর।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়