April 25, 2024
জাতীয়

নতুন বছরে সাড়ে ৭ লাখ কর্মী বিদেশে পাঠানোর লক্ষ্য

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

সদ্য সমাপ্ত বছরে বিদেশে যাওয়া কর্মীর সংখ্যা কমলেও নতুন বছরে সাড়ে সাত লাখ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। ঢাকায় রবিবার এক অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, টার্গেট সাড়ে সাত লাখ ধরেছি। এটা খুব রক্ষণশীল টার্গেট। আমরা এর চেয়ে উপরে যাব। এক্ষেত্রে ছয়-সাতটি নতুন গন্তব্যে কর্মী পাঠানোর উদ্যোগ সরকার নিচ্ছে বলে রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টস (আরবিএম) আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে জানান তিনি।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৬ লাখ ৪ হাজার ৬০ জন বাংলাদেশি কর্মী বিদেশে গেছেন, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬২ জন। এই সময়ে পুরুষ কর্মীর অভিবাসন প্রায় ৮১ হাজার জন কমেছে। তবে এই সময়ে পাঁচ হাজার ৫০৯ জন বেশি নারীকর্মী এবার বিদেশ গেছেন।

জনশক্তি রপ্তানি কমার বিষয়ে মন্ত্রী ইমরান বলেন, এটা সত্য যে বিদেশগামী শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে। কিন্তু সারা বিশ্বে কর্মী চাহিদার যে একটি পরিবর্তন এসেছে এটা কিন্তু কেউ বলছে না। এখন চাহিদা হচ্ছে দক্ষ শ্রমিকের। দক্ষ শ্রমিক দিতে না পারলে কিন্তু ফেল করব আমরা।

দক্ষ শ্রমিক তৈরির জন্য ৬৪ জেলায় ১৬৪টি ট্রেইনিং সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। সিন্ডিকেট করে শ্রমিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠার পর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে বাংলাদেশি কর্মীদের আর ভিসা দেয়নি মালয়েশিয়া। পূর্ব এশিয়ার এই শ্রমবাজার খুলতে নানা উদ্যোগ চালিয়েও ব্যর্থ হয় সরকার। বিভিন্ন সময়ে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী শ্রমিক রপ্তানির সময়সীমা জানালেও তা শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী ইমরান বলেন, আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে মধ্যস্থতা করছি। আশা করছি খুলতে পারব। আমি চাই না আগের মতো চার থেকে ছয় লাখ টাকা খরচ করে কর্মী মালয়েশিয়ায় যাবে আর জঙ্গলে লুকিয়ে বেড়াবে। আমরা ওই ধরনের কোনও চুক্তি করব না। আমাদের টার্গেট হল, সরকার যে রেট ঠিক করে দেবে সেই রেটেই মালয়েশিয়ায় শ্রমিকদের পাঠাতে হবে।

মালয়েশিয়ার পাশাপাশি ইরাক ও লিবিয়ায় শ্রমিক রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে বলে সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রী। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, অন্যায়ে জড়িত রিক্রুটিং এজেন্সি ছোট সংখ্যার হলেও আমরা সহ্য করতে রাজি না। কারণ একবার ছাড় দিলে বারবার ছাড় দিতে হবে। আমরা সেই হিসাবে কাজ করে যাচ্ছি। অন্যায়কে আমরা প্রশ্রয় দেব না।

গেল বছর মন্ত্রণালয়ের কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরে সচিব সেলিম রেজা বলেন, মালয়েশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে বন্ধ বাজার খোলার জন্য সফল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে কার্যকরভাবে যৌথ কারিগরি কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবুধাবি ডায়ালগে মন্ত্রী অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

কম্বোডিয়ার সঙ্গে রেকর্ড অব ডিসকাশন, জাপানের সঙ্গে মেমোরেন্ডাম অব কপোরেশন এবং সিশেলস এর সঙ্গে এগ্রিমেন্ট অন লেবার কপোরেশন সই হয়েছে। প্রথমবারের মতো জাপানে কেয়ার গিভার প্রেরণ করা হয়েছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে বিদেশের পাঁচটি স্থানে বিদ্যালয় ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী। তিনি জানান, ’বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেন্টিনিয়াল স্কুল’ নামে এই প্রতিষ্ঠানগুলো হবে। আরব আমিরাতে রাস আল খাইমাহ এবং গ্রিসে বিদ্যালয় নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

এর বাইরে সৌদি আরবের রিয়াদ, জেদ্দা ও দাম্মাম এলাকায় বাকী বিদ্যালয়গুলো প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। এগুলো স্কুলও হবে, কালচারাল সেন্টারও হবে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি, বলেন মন্ত্রী ইমরান। আরবিএম সভাপতি ফিরোজ মান্নার সভাপতিত্বে মিট দ্য প্রেস সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হক।

 

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *