April 19, 2024
জাতীয়শীর্ষ সংবাদ

দ্বন্দ্ব ভুলে নেতাদের ভোটের প্রস্তুতির বার্তা শেখ হাসিনার

দেশের বিভিন্ন এলাকায় দলের মধ্যে আভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে। সেটা ভুলে গিয়ে নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতেও বলেছেন সরকারপ্রধান।

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) গণভবনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির যৌথ সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা এই তথ্য জানিয়েছেন।

নেতাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী সব দ্বন্দ্ব-কোন্দল মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেন। নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দ্বন্দ্ব ভুলে যেতে হবে। ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি বিএনপির শাসনামলের চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দেয়, তা বাস্তবায়ন করে, সেটা বোঝাতে হবে।’

সূত্র জানায়, যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোনো নেতা বক্তব্য দেননি। জেলা থেকে আসা জাতীয় কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে প্রায় ২০ জন বক্তৃতা করেন।

দলীয় নেতাদের বক্তব্যে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রসঙ্গ উঠে আসে। এর জবাবে দলীয় প্রধান বলেন, এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সবাইকে জবাব দিতে হবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করছে। অথচ ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়া ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা ২৯টি আসন পেয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করলে বিএনপিকে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু তারা ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মতো অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও করলে কঠোরভাবে জবাব দেওয়া হবে।

শনিবার গণভবনে অনুষ্ঠিত এই যৌথ সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি দলকে চাঙ্গা করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। দলের কোন কোন জায়গায় সমস্যা রয়েছে তা খুঁজে বের করে সমাধানের কথা বলেন।

দলীয় সূত্র জানায়, এদিন প্রধানমন্ত্রীকে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী ও ফুরফুরে দেখা যায়। আপ্যায়নের সময় তিনি টেবিলে টেবিলে গিয়ে কথা বলেন এবং হাস্যরস করেন। কারও কারও পাতে খাবার তুলে দেন। দলীয় প্রধানের এমন আচরণে মুগ্ধ হন নেতারা।

এর আগে সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, জনগণকে দেওয়া অঙ্গীকার অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সবসময় জাতির কল্যাণে কাজ করে এবং দেশের মানুষ এর সুফল ও পাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার দেশেবাসীর কাছে উপস্থাপন করে এবং সবসময় তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার রক্ষা করে, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের যে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে তা অনেকেই মেনে নিতে পারছে না। নানা ধরনের কথা রটায় কিন্তু মুলত একটা পরিবর্তন যে এসেছে মানুষের জীবনযাত্রায় আর তাছাড়া রাস্তা-ঘাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থারতো আমরা প্রভূত উন্নতি করেছি। তারপরও এসব উন্নতিও অনেকে চোখে দেখেও না দেখার ভান করে, স্বীকার করতে চায় না, করতে চাইবেও না। কিন্তু যেটা আমি সবসময় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা করে সে ওয়াদা রক্ষা করে।

সরকারপ্রধান বলেন, প্রত্যেক ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে আমরা ঘর করে দিচ্ছি, আমাদের কথা ছিল প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা আলো জ্বালাবো সেটাও আমরা পেরেছি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, কোথাও দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার।

শেয়ার করুন: