April 27, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

দেশে করোনা টিকা কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

দেশে করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকাদান কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার পর রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থেকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।

উদ্বোধনের পরপরই নিবন্ধনের জন্য অনলাইন ‘সুরক্ষা’ প্ল্যাটফর্ম খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন দেশব্যাপী ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করতে আর বাধা থাকলো না। ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ থেকে দেশব্যাপী ব্যাপকহারে এ কার্যক্রম চলবে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর প্রথম টিকা নেন হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরোনিকা কস্তা। এরপর পর্যায়ক্রমে চিকিৎসক হিসেবে প্রথম টিকা নেন মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. আহমেদ লুৎফর মবিন, তারপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, ট্রাফিক পুলিশের সদস্য দিদারুল ইসলাম এবং সেনা বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরান হামিদ।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন প্রথমদিন বুধবার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেই টিকা দেওয়া হবে। বাকি চারটি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) থেকে শুরু হবে প্রাথমিক পর্যায়ের টিকাদান কর্মসূচি।

তিনি বলেন, চিকিৎসাকর্মী, সেনাবাহিনীর সদস্য, পুলিশ, খেলোয়াড় ও সাংবাদিকসহ ২০-২৫ জনকে টিকা দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) ও মুগদা হাসপাতালে ২৮ জানুয়ারি থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এসব হাসপাতালের ৪শ থেকে ৫শ স্বাস্থ্যকর্মীকে সবার আগে টিকা দেওয়া হবে। টিকা দেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে প্রতিটি হাসপাতালেই আলাদাভাবে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

এর আগে ২০ জানুয়ারি ভারত সরকারের উপহার দেওয়া অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিডশিল্ড দেশে পৌঁছায়। সোমবার (২১ জানুয়ারি) দেশে আসে বেক্সিমকোর কেনা তিন কোটি টিকার প্রথম ৫০ লাখ ডোজ। এর মধ্যে ৬০ লাখ দেওয়া হবে প্রথম মাসে, দ্বিতীয় মাসে ৫০ লাখ, তৃতীয় মাসে আবার ৬০ লাখ। প্রথম মাসে যারা পাবেন তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে তৃতীয় মাসে। চুক্তি অনুযায়ী বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ঢাকা থেকে দেশের ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনের কাছে টিকা পাঠানো হবে।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ভারত থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫০ লাখ ডোজ টিকা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, টিকার প্রতিটা লটের নমুনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমদ বলেন, ইতোমধ্যে টিকা দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার বিকেল ৩টায় প্রাথমিক পর্যায়ের টিকা দেওয়া হবে। টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীসহ প্রায় ১শ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

ওই হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রথম এক জন নার্সের শরীরে টিকা প্রয়োগের মধ্য দিয়ে দেশে এ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। প্রথম টিকা নেবেন হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরোনিকা কস্তা। তার সঙ্গে আরও দুই জন সিনিয়র স্টাফ নার্স মুন্নী খাতুন ও রিনা সরকারও টিকা নেবেন। চিকিৎসক হিসেবে প্রথম টিকা নেবেন মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. আহমেদ লুৎফর মবিন। ভ্যাকসিনেটর হিসেবে টিকা দেওয়ার জন্য সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনা আক্তার ও দীপালী ইয়াসমিনের নাম রয়েছে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *