তেরখাদার ঔষধ ব্যবসায়ী হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ৫
দ. প্রতিবেদক
খুলনার তেরখাদা উপজেলার কাটেঙ্গা বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী ফিরোজ শেখ হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মোঃ ইয়ারব হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম ইলিয়াজ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মৃত রহমান মোল্লার ছেলে ফরিদ মোল্লা, লকিত মোল্লার ছেলে মিসবাহ মোল্লা, রিজ্জাক মোল্লার ছেলে মোর্তজা মোল্লা ও খালিদ মোল্লার ছেলে টুটুল মোল্লা। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আফসার শিকদারের ছেলে সেলিম শিকদার, মোস্তফা শিকদারের ছেলে শহিদুল শিকদার চানমিয়া শিকদারের ছেলে নাসির শিকদার ও মুক্ত মোল্লা। এছাড়া যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় ফাঁসির আসামি মোরতোজা ও যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি মেহেদী পলাতক। উল্লেখিত সকল আসামি তেরখাদা উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, তেরখাদা উপজেলার কাটেঙ্গা বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী ফিরোজ শেখ ২০১০ সালের ১৫ আগস্ট ওষুধের দোকান বন্ধ করে আরিফ মোল্লাকে সাথে করে বাড়ির উদেশ্যে রওনা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রোজা উপলক্ষে মালামাল ক্রয়ের জন্য মুন্সী বাড়ির দক্ষিন পাশে পৌছা মাত্র তার পূর্ব পরিচিত সন্ত্রাসীরা তার উপর অতর্কিত হামলা করে। সন্ত্রাসীরা দেশীয় তৈরী অস্ত্র দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ মারত্মকভাবে কুপিয়ে জখম করে। পরে ফিরোজ শেখ ও তাকে বহনকারী ভ্যান চালকের চিৎকারে পাশের লোকজন ছুটে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। মারাত্মক জখম অবস্থায় তাকে প্রথমে তেরখাদা হাসপাতালে নেয়া হয়, তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ৩ টায় মারা যান। পরে ওই ঘটনায় তিনদিন পর নিহতের ভাই হিরু শেখ বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে তেরখাদা থানায় মামলা দায়ের করেন, যার নং ৯।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি আব্দুর রাজ্জাক ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ৩০ জন স্বাক্ষী মামলায় স্বাক্ষ্য দিয়েছেন।
এ মামলার রায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ১৩ আসামির মধ্যে চার আসামিকে ফাঁসি ও পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলায় অপর চার আসামির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেয়া হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ