April 20, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

ডুমুরিয়ায় টুম্পা হত্যা মামলায় স্বামীসহ তিনজনের মৃত্যুদন্ড

দ. প্রতিবেদক
খুলনার ডুমুরিয়ায় টুম্পা রানী মন্ডল (২৫) হত্যা মামলায় ৩০২ ধারায় তার স্বামী প্রসেনজিৎ গাইন (২৭) সহ তিনজনকে মৃত্যুদÐ ও প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা অর্থদÐ দিয়েছে আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হল- গৃহবধূর স্বামী প্রসেনজিৎ গাইন (২৭), তার বন্ধু অনিমেষ (২৫) ও বিপ্লব কান্তি মন্ডল (৩২)। নিরপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় খালাস পেয়েছেন সুদাশ গাইন। একই সাথে লাশ গুমের অভিযোগে ২০১ ধারায় ওই তিন আসামীর ৭ বছর কারাদÐ ও ২০ হাজার টাকা অর্থদÐ দেয়া হয়েছে। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) এনামুল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরখালী ইউনিয়নের চÐিপুর গ্রামের সুরঞ্জন মÐলের কন্যা টুম্পা রানী মÐলের সাথে একই উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের সেনপাড়া গ্রামের পরিমল গাইনের পুত্র প্রসেনজিৎ গাইনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে তারা গোপনে বিয়ে করে এবং খুলনা শহরে ভাড়া বাসায় সংসার জীবন শুরু করেছিল। ঘটনাটি উভয় পরিবারের মধ্যে জানাজানি হলে দু’পক্ষই আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ও ধুমধামের সাথে পুনরায় বিয়ের কথা বলে তাদের বাড়িতে ফিরে যায়। কিছুদিন পরেই স্বামীপক্ষ সবকিছু অস্বীকার ও অসদাচরণ শুরু করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে টুম্পা শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করলে তাকে পিটিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে টুম্পা রানী মন্ডল বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এসব কর্মকাÐের কিছুদিন পর স্বামী প্রসেনজিৎ স্ত্রীর স্বীকৃতি ও মামলা প্রত্যাহারের কথা বলে টুম্পার সাথে গোপনে আবারো যোগাযোগ শুরু করে। স্বামীর কথায় রাজি হয়ে টুম্পাও বিভিন্ন সময় মুঠোফোন ও সরাসরি তার সাথে সাক্ষাৎ করে।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর বিকেলে টুম্পা স্বামীর সাথে দেখা করতে বাড়ি থেকে বের হয়। সেই থেকে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না তার মা-বাবা। ওই বছরের ৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় শোভনা ইউনিয়নের বাদুরগাছা মঠ-মন্দিরের পাশে ঘ্যাংরাইল নদীতে ভাসমান অবস্থায় এক নারীর লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে টুম্পার স্বজনদের খবর দেয় এবং মৃতদেহটি শনাক্ত শেষে মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই সমিত মÐল বাদি হয়ে ডুমুরিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কেরামত আলী ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মামলার বাদী নিহতের ভাই সমিত মÐল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ন্যায্য বিচার হয়েছে। এরায় দ্রæত কার্যকর করা হোক।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *