May 19, 2024
আন্তর্জাতিক

খ্রিস্টানরাও ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহার করতে পারবে : মালয়েশিয়ান আদালত

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার রায় দিয়েছেন মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট। প্রায় এক দশকের আইনি লড়াই শেষে বুধবার এই রায় এল। খবর বিবিসির।

এক খ্রিস্টান ব্যক্তির ধর্মীয় উপকরণে আল্লাহ শব্দ থাকায় সেই উপকরণ জব্দ করা হয়েছিল। এ ঘটনায় যে মামলা দায়ের হয়েছিল সেই রায়ের অংশ হিসেবেই এ ঘোষণা দিলেন আদালত।

মালয়েশিয়ায় অমুসলিমরা অতীতে ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহার করায় ধর্মীয় উত্তেজনা বৃদ্ধি এমনকি সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। দেশটিতে প্রায় তিনভাগের দুই ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলিম। তবে সেখানে বড় পরিসরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও রয়েছে।

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের দাবি, তারা শত শত বছর ধরে সৃষ্টিকর্তা বোঝাতে ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহার করে আসছে যা আরবি থেকে থেকে মালয় ভাষায় এসেছে। অতীতের নিষেধাজ্ঞাটি তাদের এই শব্দ ব্যবহারের অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছিল বলে তাবি করে তারা।

মালয়েশিয়ার সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। তবে সম্প্রতি দেশটিতে ধর্মীয় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০০৮ সালে জিল আয়ারল্যান্ড লরেন্স বিল নামে এক খ্রিস্টান নারীর কাছ থেকে কিছু সিডি জব্দ করা হয়। বিমানবন্দর থেকে জব্দ করা সিডিগুলোতে দেখা যায়, এগুলোর রেকর্ডিংয়ের শিরোনামে ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।

এরপর বিল আদালতের ১৯৮৬ সালের এক নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে। সেই নির্দেশে খ্রিস্টানদের প্রকাশনায় ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ছিল।

এই চ্যালেঞ্জের এক দশকেরও বেশি সময় পর বুধবার কুয়ালালামপুর হাই কোর্ট রায় দেন, নিজের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী বৈষম্যের শিকার না হওয়ার অধিকার ওই নারীর রয়েছে।

বিচারক নর বি ‘আল্লাহ’র পাশাপাশি আরও তিনটি শব্দ খ্রিস্টানরা ব্যবহার করতে পারবে বলে রায়ে দেন। এগুলো হলো- কাবা, বাইতুল্লাহ ও সালাত। তিনি বলেন, এই চারটি শব্দ ব্যবহারে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা ‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক’।

‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহার সংক্রান্ত বিবাদ এটিই মালয়েশিয়ায় প্রথম নয়। ‘দ্য হেরাল্ড’ নামে একটি স্থানীয় ক্যাথলিক সংবাদপত্র তাদের মালয় ভাষার সংস্করণে খ্রিস্টীয় ঈশ্বর বোঝাতে ‘আল্লাহ’ শব্দ ব্যবহার করায় সরকার তাতে আপত্তি জানায়। এরপর সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পত্রিকাটি।

২০০৯ সালে আদালত দ্য হেরাল্ডের পক্ষে রায় দেন এবং আল্লাহ শব্দ ব্যবহারে তাদের অনুমতি দেন। এরপর দেশটিতে মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এর জের ধরে বেশ কয়েকটি গির্জা ও কিছু মসজিদে হামলা চালানো ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

এরপর ২০১৩ সালে এক আপিলের মাধ্যমে আদালতের এই সিদ্ধান্ত তুলে নেয়া হয় এবং আগের নিষেধাজ্ঞা আবারও কার্যকর করা হয়।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *