খুলনা মহানগরীর দুটি ওয়ার্ড ও আইচগাতীতে ২১ দিনের জন্য লকডাউন শুরু
জয়নাল ফরাজী…
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় খুলনা মহানগরীর ১৭ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং রূপসার উপজেলার আইচগাতি ইউনিয়নে ২১ দিনের লকডাউন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত (রাত ১২টা) থেকে জেলা প্রশাসন ঘোষিত রেডজোনে এ লকডাউন কার্যকর হয়। লকডাউনের সময়ে এসব স্থানে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ মোতায়েন থাকবে। বাইরের লোক ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এলাকা থেকেও যাতে বাইরে কেউ বের হতে না পারেন সে ব্যাপারেও সজাগ দৃষ্টি রাখবে পুলিশ। এছাড়া এই তিন পয়েন্টের বাসিন্দাদের বেশ কিছু নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. শেখ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, ‘বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নগরীর ১৭নং ওয়ার্ডে ৯৮ জন, ২৪নং ওয়ার্ডে ৫০ জন, আইচগাতি ইউনিয়নে ৩৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।’
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে মহানগরীর ১৭নং ওয়ার্ডের ২৪টি পয়েন্টে ও ২৪নং ওয়ার্ডের ৩০টি পয়েন্টে বাঁশ (সড়কে ব্যারিকেড) দেওয়া হয়েছে।
রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন আক্তার দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়নের দশটি পয়েন্টে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৬টি ঘাটে ট্রলার চলাচল বন্ধ হবে।
এর আগে গত বুধবার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে রেডজোনে থাকা বাসিন্দাদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে- রেডজোনে বসবাসকারী চাকুরিজীবীরা বাসায় থেকে অফিসের কাজ করবেন। জরুরি প্রয়োজনে (যেমন ওষুধ ক্রয় ) অনুমতি সাপেক্ষে বাসা থেকে বের হওয়া যাবে। রিক্সা, ভ্যান, সিএনজি, ট্যাক্সি, মটরসাইকেল, নিজস্ব গাড়িসহ কোনো যানবাহন চলবে না। অ্যাম্বুলেন্স সেবা এই আদেশের আওতাবর্হিভূত থাকবে। এসব এলাকায় কল-কারখানা বন্ধ থাকবে। অতি জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। কোনো ধরনের জনসমাবেশ করা যাবে না। কেবলমাত্র অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে যেতে পারবেন।
অন্যান্য বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে- রেডজোনে অন্য এলাকা হতে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। মুদি দোকান, ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। রেস্টুরেন্ট ও খাবার দোকানে কেবলমাত্র হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু থাকবে। তবে শপিংমল, সিনেমা হল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। মসজিদ ও উপাসনালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করতে পারবেন। অন্যান্যরা নিজ নিজ বাড়িতে ইবাদত করবেন। তবে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও কাঁচাবাজার বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে।