April 20, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশিক্ষাশীর্ষ সংবাদ

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধান না মেনে সংবাদ
সম্মেলন খুবিকে অশান্ত করার ইঙ্গিত!

দ. প্রতিবেদক
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষার্থীর বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান। এসময়ে শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে খুবি শিক্ষার্থীদের ৫ দফা আন্দোলনে যুক্ত থাকার কারণে বাংলা ডিসিপ্লিনের মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান (‘১৮ ব্যাচ) এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ইমামুল ইসলামকে (‘১৭ ব্যাচ) অসদাচরণের অভিযোগে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে ছিল বেতন কমানো, আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করা, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অবকাঠামো নির্মাণ ও ছাত্রবিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি সংক্রান্ত স্মারকলিপি ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের মাধ্যমে উপাচার্যের কাছে পেশ করে। তাতেও কোনো সমাধান না পেয়ে গেল বছরের ১ জানুয়ারি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। কিছুদিন পর আন্দোলন চলাকালীন দু’জন শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে খুবি প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বক্তব্য জানতে চায়। এরপর তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন শেষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের সাথে অসদাচারণসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড সম্প্রতি ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলাম (রোল নং- ১৭২৭০৭) কে দুই বছরের জন্য এবং বাংলা ডিসিপ্লিনের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন নোমান (রোল নং-১৮১৯৫৭) কে এক বছরের জন্য শিক্ষাকার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ডের এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কাউন্সিলের কাছে আপিল করতে পারবে। আত্মপক্ষ সমর্থনের এমন সুযোগ গ্রহণ না করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধিবিধান না মেনে ওই দুই শিক্ষার্থী খুলনা প্রেস ক্লাবে কেন সাংবাদিক সম্মেলন করছে ? এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তোর দিতে পারেনি তারা।
তাছাড়া তারা প্রাথমিকভাবে গঠিত তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা করেনি বা কমিটির সামনে যেয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানায় এমন প্রশ্নের উত্তরে যে কারণ প্রদর্শন করে তাতে তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ আবারও প্রমাণিত হয়। গতবছর পহেলা জানুয়ারি প্রথমবর্ষের নবাগত শিক্ষার্থীরা যখন ভর্তি হতে তাদের অভিভাবকদের সাথে নিয়ে ক্যাম্পাসে আসে তখন উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ভেঙ্গে কর্মসূচির নামে বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত করার চক্রান্তে মেতে ওঠে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান করে সকল ডিন সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটিকে অপমানিত করা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, কর্মরত শিক্ষক ও শত শত কর্মকর্তা, কর্মচারিকে অবরুদ্ধ করে রাখে। তাদের এই বিশৃঙ্খলা ও উদ্দেশ্যপূর্ণ কর্মসূচিতে বেআইনীভাবে সমর্থন দেন ৩-৪ জন শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের মেয়াদের শেষ দিকে আবারও একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত। ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকা সত্ত্বেও এই মহলটি নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধিবিধান অমান্য করে শাস্তিপ্রাপ্ত এই দুই শিক্ষার্থী আরও একটি গুরুতর অপরাধ করলো বলেও সূত্রটির অভিমত।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *