November 27, 2024
আঞ্চলিককরোনালেটেস্ট

খুলনায় বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, একদিনে সর্বোচ্চ ৮০ জন শনাক্ত

জয়নাল ফরাজী
খুলনায় প্রতিনিয়ত বেড়েইে চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) আরটি-পিসিআর ল্যাবে আরও ৮০ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে খুলনা জেলা ও মহানগরীর ৪৫ জন রয়েছেন। এছাড়া বাগেরহাটের ৭ জন, সাতক্ষীরার ৪ জন, যশোরের ১৩ জন, ঝিনাইদহে ৯ জন ও মাগুরার ২ জন রয়েছেন। আজ শনিবার রাতে তাদের নমুনা পরীক্ষার পর এ তথ্য পাওয়া গেছে।
খুমেকের পিসিআর ল্যাবে একদিনে শনাক্ত হওয়া সর্বোচ্চ সংখ্যা এটি। গত শুক্রবার সর্বোচ্চ ৫৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ওইদিন খুলনারই ছিলেন ৪০ জন। এর আগে গত বুধবার ৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ওইদিন খুলনার ছিলেন ৩১ জন। পরের দিন বৃহস্পতিবার ৩৯ জনের করোনা শনাক্ত হলেও জেলা ও মহানগরীতে শনাক্ত হয়েছিলেন ৩৫ জন। শনিবার ৮০ জনের করোনা শনাক্তের মধ্য দিয়ে শুক্রবারকে অতিক্রম করেছে। স্থানীয়ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা এবং মোট শনাক্ত হওয়া রোগীদের সংখ্যায় এটিই সর্বোচ্চ।
খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, শনিবার খুমেকের পিসিআর মেশিনে ২৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে খুলনা জেলার নমুনা ছিলো ১২৪টি। এদের মধ্যে মোট ৮০ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। যার ৪৫ জনই খুলনার। বাকিদের মধ্যে বাগেরহাট জেলার ৭ জন, সাতক্ষীরা জেলার ৪ জন, যশোর জেলার ১৩ জন, ঝিনাইদহ জেলার ৯ জন ও মাগুরা জেলার ২ জন রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, খুলনায় শনাক্তদের মধ্যে রয়েছেন- পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি এলাকার ৮৮ বছরের এক বৃদ্ধ, বটিয়াঘাটা উপজেলার হাসপাতাল কোয়ার্টারের ৪৯ বছরের এক নারী, ৪৫ বছরের এক পুরুষ, নগরীর বানিয়াখামার এলাকার ৩৬ বছরের এক ব্যক্তি, তেরখাদা উপজেলার ২০ বছরের এক তরুণ, ২৩ বছরের এক তরুণী, সাড়ে ৩ বছরের এক ছেলে, দিঘলিয়ার সেনহাটী এলাকার ১১ বছরের এক মেয়ে ও ৪৪ বছরের এক নারী, নগরীর টুটপাড়া এলাকার ৫৫ বছরের দুই ব্যক্তি, সাউথ সেন্ট্রাল রোডের ১০ বছরের এক কিশোর ও ৩ বছরের এক মেয়ে, রূপসা উপজেলার শিরগাতি এলাকার চারজন- এরা হলেন ৬০ বছরের এক বৃদ্ধা, ১২ বছরের এক ছেলে, ১৪ বছরের এক মেয়ে ও ২৪ বছরের এক তরুণী, রূপসা সেনেরবাজার এলাকার ৪০ বছরের এক ব্যক্তি, খালিশপুর সেন্ট্রাল রোডের ৬৬ বছরের এক বৃদ্ধা, ক্রিসেন্ট আবাসিক এলাকার ৪১ বছরের এক ব্যক্তি, কেশবপুরের মনোহরনগর এলাকার ৪৫ বছরের এক ব্যক্তি, দিঘলিয়া উপজেলার ৩০ বছরের এক যুবক, নগরীর ৬৮ বছরের এক বৃদ্ধা, তেরখাদা উপজেলার ৩২ বছরের এক যুবক, নগরীর ময়লাপোতা এলাকার ৬৬ বছরের এক বৃদ্ধা, নগরীর শেখপাড়া এলাকার ৪৫ বছরের এক ব্যক্তি, মুজগুন্নি ২১নং রোডের ১৯ বছরের এক তরুণ, মুজগুন্নি ২নং রোডের ৪৬ বছরের এক ব্যক্তি, ১০নং মুসলিমপাড়া এলাকার ৬০ বছরের এক বৃদ্ধ ও ২০ বছরের এক তরুণী, ইলশাপাড়া এলাকার ৬০ বছরের এক বৃদ্ধা, বকশিপাড়া লেনের ৬১ বছরের এক বৃদ্ধ, নগরীর ২৯ বছরের এক যুবক, টুটপাড়া এলাকার ২২ বছরের এক তরুণী, টুটপাড়া এলাকার ৩০ বছরের এক যুবক, দৌলতপুরের দেয়ানা এলাকার ২০ বছরের এক তরুণ, দিঘলিয়ার সেনহাটী এলাকার ৫৫ বছরের এক ব্যক্তি, গল্লামারি এলাকার ৩০ বছরের এক যুবক, নতুনবাজার বাঁশপট্টি এলাকার ২৩ বছরের তরুণ, রূপসা উপজেলার শিরগাতি এলাকার ১৭ বছরের তরুণী ও ৩৯ বছরের নারী, নিরালা ২৮নং রোডের ৪৭৩নং বাসার তিনজন- এদের মধ্যে ৩৮ বছরের এক নারী, ১১ বছরের এক ছেলে ও ৩৫ বছরের এক নারী, বাগমারা এলাকার ৩৫ বছরের এক ব্যক্তি।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ দিনেই খুলনা জেলা ও মহানগরীতে ২৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৮৭ জনে। এদের মধ্যে ৫১ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আর মারা গেছেন ৪ জন।
খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, প্রতিনিয়ত খুলনায় করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবুও মানুষের মাঝে পর্যাপ্ত সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। অকারণে অনেকে বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন। আর বাইরে ঘোরাঘুরির কারনে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। নারীদের তুলনাই পুরুষদের বেশি আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণ হলো বাইরে ঘোরাঘুরি করা।
উল্লেখ্য, খুলনায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ১৩ এপ্রিল মহানগরীর করিমনগর এলাকার এক বৃদ্ধের। আর করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রথম রোগী মারা যান গত ২১ এপ্রিল রূপসা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের এক ব্যক্তি।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *