May 8, 2024
জাতীয়

করোনাকালে ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েছে নারী নির্যাতন

 করোনাকালে নারী ও শিশু নির্যাতনের মাত্রা প্রতিমাসে ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি।

সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত ‘নারী ও শিশু নির্যাতনের বর্তমান প্রেক্ষাপট ২০২০: বিশ্লেষণ ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী এ তথ্য জানান।

সালমা আলী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে নারী ও শিশু নির্যাতনের মাত্রা প্রতিমাসে ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েছে সারা বিশ্বব্যাপী। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সহিংসতার রূপ পরিবর্তিত হচ্ছে এবং এর প্রধান শিকার হচ্ছে বাংলাদেশের নারী ও শিশুরা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির এক হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত  সারাদেশে শুধু নারী ও শিশু সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা আনুমানিক ১৮ হাজার ২২১টি।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে ১১টি সুপারিশ উত্থাপন করা হয়৷

সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- ধর্ষণের মুখোমুখি নারী ও শিশুদের জন্য সার্বিক আইনি সহযোগিতার ব্যবস্থা এমনভাবে করতে যেখানে তাদের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে সুরক্ষা বলয় নিশ্চিত করা, দ্রুত বিচার এবং সাক্ষী সুরক্ষার পাশাপাশি আধুনিক ফরেনসিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেসগুলোর যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করা, তদন্তকার্য রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে এবং আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সব স্তরে প্রশিক্ষিত কর্মী থাকতে হবে, উচ্চ আদালতে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত সব মামলা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দ্রতবিচার সম্পন্নের জন্য আলাদা কোর্ট প্রয়োজন, মানবপাচার সংক্রান্ত মামলা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দ্রুতবিচার সম্পন্নের জন্য ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে, প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুদের সামগ্রিক তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণের জন্য যথাযথ মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, প্রান্তিক গোষ্ঠীর (প্রতিবন্ধী, হিজড়া) জন্য বৈষম্যহীন আইনি পরিষেবা নিশ্চিত করা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, শ্রম পরিদর্শক এবং অভিবাসন কর্মকর্তাসহ কর্মকর্তাদের পাচারের মামলার শনাক্তকরণ এবং পরিষেবাগুলিতে ভুক্তভোগী রেফারেলসহ প্রশিক্ষণ বাড়ানো, সব কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কার্যকরী কমিটি গঠন, নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০২০ সব ধরনের ধর্ষণকে আইনের আওতাভুক্ত করার জন্য পেনিট্রেশনের একটি সংজ্ঞা যুক্ত করতে হবে যাতে করে ধর্ষণের শিকার বা ধর্ষণ অপরাধের মধ্য দিয়ে যাওয়া ব্যক্তির যোনি, মলদ্বার বা মুখে যৌনাঙ্গ পেনিট্রেশনসহ বিভিন্ন বস্তুর বা অপরাধীর শরীরের অন্য অঙ্গের পেনিট্রেশন অন্তর্ভুক্ত হয় এবং সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ (৪) ধারা এবং এ সংক্রান্ত অন্য ধারা সংশোধনের মাধ্যমে ধর্ষণ মামলার বিচারে অভিযোগকারীর চরিত্রগত সাক্ষ্যের গ্রাহ্যতা বন্ধ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোবায়দা পারভিন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সমিতির নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট জাকিয়া আনার কলি।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *