November 25, 2024
আঞ্চলিক

করোনাকালিন পরিস্থিতিতে প্রায় এক কোটি টাকার অর্থ সহায়তা দিলো ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ

পেল খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে তিন হাজারেরও বেশি পরিবার

খবর বিজ্ঞপ্তি:

করোনাকালিন অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ সারাদেশে ১৮৬৮৪ পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের ৩১৫৭ পরিবারের মধ্যেনিরানব্বই লাখ পঞ্চান্ন হাজার টাকার নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয় । এর মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্রায় দুমাসের অধিক সময় ধরে লকডাউনের কারণে সংকটে থাকা নি¤œআয়ের মানুষের পরিবারের তাৎক্ষনিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে । বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার শারীরিক প্রতিবন্ধী মাসুম শেখ (৪৭), একটা রিক্সা মেরামত কারখানায় কাজ করে তিন সদস্যের পরিবারের জন্য তিন বেলা আহারের সংস্থান করেন। তিনি বলেন ” এই সংকটের সময় ওয়ার্ল্ড ভিশনের এই অর্থ সহায়তায় যে কতটা উপকৃত হয়েছি তা বোঝাতে পারবো না। গত তিন মাস ধরে আমার উপার্জন বন্ধ, ধার দেনা করে অনাহার অর্ধাহারে বহু কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমার শরীরিক সমস্যা থাকা সত্তে¡ও টাকার অভাবে ডাক্তার দেখাতে পারছিনা। আজ বিকাশের মাধ্যমে ৩০০০ টাকা পেয়েছি, আজই ডাক্তারের কাছে যাব। এছাড়া ধার-দেনা শোধ করব আর কিছু জরুরী খাওয়া খাদ্য কিনতে হবে।”

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সাউদার্ন বাংলাদেশ রিজিওনের পরিচালক লিমা হান্না দারিং বলেন “এই ধরনের সংকটে শিশুরা নির্যাতন ও শোষণের মতো বিষয়ে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে যে সময় তাদের মানসিক সাহায্য খুব প্রয়োজন। ইবোলা মহামারীর মতো অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যে শ্রেণীকক্ষের বাইরে থাকায় শিশুদের প্রতি বাড়ীতে সহিংসতা বিশেষ করে শারীরিক ও যৌন সহিংসতা , বাল্য বিবাহ এবং মানসিক নির্যাতন বেড়ে যায়।” মাসুম শেখের মতো সাউদার্ন বাংলাদেশ রিজিওনের (খুলনা ও বরিশাল বিভাগ) শহরাঞ্চলের ২৪২ পরিবার ৫০০০ টাকা করে এবং গ্রামাঞ্চলের ২৯১৫ পরিবার ৩০০০ টাকা নগদ অর্থ সহায়তা পেয়েছে। লিমা হান্না দারিং আরও বলেন “বাংলাদেশ সরকারের কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রচেষ্টার পরিপূরক হিসাবে এ বছরের এপ্রিল মাসে ওয়ার্ল্ড ভিশন জাতীয় পর্যায়ে কোভিড-১৯ সাড়াদান কর্মসূচী গ্রহণ করেছে যার লক্ষ্য হল জনগণের জীবন রক্ষার উপকরণ, সেবা ও তথ্য প্রদান করা। ওয়ার্ল্ড ভিশন সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সাথে তাদের শিশুদের জীবন মানের উন্নয়নে কাজ করে থাকে। কোভিড-১৯ বিস্তারের কারণে অবহেলিত এ সকল মানুষের জীবন ও জীবিকায় খুবই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে । কোভিড১৯ সাড়াদান কর্মসূচী দেশের ২৪ জেলায় ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্ম এলাকায় বাস্তবায়িত হচ্ছে যার মাধ্যমে শিশু, প্রতিবন্ধী মানুষ, নারী ও শিশু প্রধান পরিবারের চাহিদাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমরা স্থানীয় সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করে উপকার ভোগী নির্বাচন করেছি।”

একটি ব্যাংকের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকরাী সংস্থার সহযোগিতায় উপকার ভোগীর মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সহায়তার অর্থ সরাসরি চলে যায় । মাত্র ২/৩ দিনের মধ্যে নিরাপদে ও দক্ষতার সাথে পৌছে যাচ্ছে এই সেবা। “উপকার ভোগী নির্বাচন থেকে অর্থ হস্তান্তরের পুরো প্রক্রিয়াটাই বিভিন্ন সফটওয়্যরের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হয়ে থাকে । প্রথমে ব্যাংকে অর্থ প্রদানের আদেশ দেয় ওয়ার্ল্ড ভিশন, পরে সেই অর্থ মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারীর কাছে চলে যায়” বলেন লিমা হান্না
দারিং। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ কোভিড-১৯ বিষয়ক সতর্ক বার্তা এবং সাবান, মাস্ক এর মতো হাইজিন সামগ্রী প্রদান করার মাধ্যমে মাসুম শেখের মতো পরিবারগুলোকে ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে। এখন পর্যন্ত দক্ষিানঞ্চলে ওয়ার্ল্ড ভিশন ২৬২৮ পরিবারকে হাইজিন কিট্স, ১৬০৮ পরিবারকে হাত ধুয়ার সরঞ্জাম, ৫২৭ জন স্বাস্থ্য কর্মীকে পিপিই এবং ৫৮৯ জন স্বাস্থ্য কর্মীকে মাস্ক, গ্লাভস ও হ্যান্ড সেনিটাইজার বিতরণ করেছে । আমাদের সামনের সারির কর্মীরা কমিউিনিটির নেতাদের সাথে কাজ করার মাধ্যমে শিশু, পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধী বার্তা দিয়ে যাচ্ছে ।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *