এক বছরেই উজাড় আমাজনের সাড়ে ৯ হাজার বর্গ কিলোমিটার
ব্রাজিলে নতুন সরকার আসার আগ দিয়ে পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত আমাজন বন ধ্বংসের প্রবণতা আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। অনেকের মতে, এমনিতেই বৈশ্বিক জলবায়ুর মারাত্মক বিপর্যয় ঘটেছে, তার ওপর আমাজনকে এভাবে ধ্বংস করতে থাকলে পৃথিবীর অস্তিত্বে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আল জাজিরা বলছে, দেশটির সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর আমলেই ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে আমাজন। তার প্রশাসনের দ্বারাই বনটির বিস্তর অঞ্চল পুড়িয়ে ফেলে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প করা হয়েছে।
সেসময় বলসোনারো প্রশাসন বলেছিল, দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আমাজন পরিষ্কার আরও বেশি মাইনিং (মূল্যবান পদার্থের খনি খনন) ও উন্নয়নমূলক প্রকল্প করা হচ্ছে।
কিন্তু স্থানীয় অধিকারকর্মীরা দেশটির পরিবেশ ও আদিবাসীদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলার জন্য বলসোনারোকে ব্যাপকভাবে দায়ী করেন। তারা দাবি করেন, বলসোনারোর এমন সিদ্ধান্তেই বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বন উজাড় ও সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুক্রবার (১২ নভেম্বর) সরকারি স্যাটেলাইট থেকে আমাজনের বেশ কয়েকটি ছবি সংগ্রহ করেছে ব্রাজিলিয়ান মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র। সেখানে দেখা যায়, এ বছরের অক্টোবরের মধ্যে আরও প্রায় ৯০৪ বর্গ কিলোমিটার বন কেটে পরিষ্কার করা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে পর্যবেক্ষণ বা তদারকি শুরু হওয়ার পর এই প্রথম এত বেশি পরিমাণ বন ধ্বংসের প্রমাণ পাওয়া গেলো।
জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে আমাজনের ৯ হাজার ৪৯৪ বর্গ কিলোমিটার (তিন হাজার ৬৬৬ বর্গ মাইল) জায়গা পরিষ্কার করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ১২ গুনেরও বেশি।
২০১৯ সালে আমাজনের ৯ হাজার ৬০ বর্গ কিলোমিটার (তিন হাজার ৫০০ বর্গ মাইল) জায়গা থেকে গাছপালা পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল।
ব্রাজিলের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা নির্বাচনের আগে আমাজন বন রক্ষায় আশাজাগানিয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতায় এলে আমাজন ধ্বংস বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি যেসব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বনটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে তাদের আরও শক্তিশালি করে তোলা হবে।
নির্বাচনে জয়লাভের পর দেওয়া সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি বলেন, ব্রাজিল এখন আমাজন রক্ষার মাধ্যমে জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। বন উজাড়ের পরিমাণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার কাজ করবে তার প্রশাসন।