May 3, 2024
আন্তর্জাতিকজাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

একে অপরকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

তাইওয়ানের বিষয়ে একে অপরকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। বিষয়টি দুই দেশের প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা ফোন কলে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বলেছেন, দ্বীপটির মর্যাদা পরিবর্তনে যেকোনও একতরফা পদক্ষেপের বিরোধিতা করবে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে তিনি যোগ করেছেন, তাইওয়ানের বিষয়ে মার্কিন নীতি পরিবর্তন হয়নি।
তবে বাইডেনকে এক-চীন নীতি মেনে চলতে বলেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এ সময় তিনি তাকে সতর্ক করে বলেন, “যে আগুন নিয়ে যে খেলবে, তাকে পুড়তে হবে।”

মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বা প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের গুজবকে ঘিরে সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, পেলোসি কোনও সফরের ঘোষণা দেননি। তবে চীন সতর্ক করেছে, পেলোসি যদি এমন কোনও সফরে যান তাহলে এর পরিণতি গুরুতর হবে।

গত সপ্তাহে বাইডেন সাংবাদিকদের বলেছেন “সেনাবাহিনী মনে করছে এটি কোনও ভাল আইডিয়া নয়।”

তবে কোনও সফরের বিরুদ্ধে চীনের এমন বক্তব্যকে ‘সম্পূর্ণ অকেজো এবং অপ্রয়োজনীয়’ বলে অভিহিত করেছে হোয়াইট হাউস।

পেলোসি, যিনি ভাইস-প্রেসিডেন্টের পরে প্রেসিডেন্ট হওয়ার তালিকায় রয়েছেন, তিনি ১৯৯৭ সালের পর তাইওয়ানে ভ্রমণকারী সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর প্রথম কোনও মার্কিন রাজনীতিবিদ হবেন।

বৃহস্পতিবারের ফোন কলের সময় জো বাইডেন এবং শি জিনপিং তাদের সম্ভাব্য মুখোমুখি বৈঠকের বিষয়েও আলোচনা করেছেন।

বাইডেন যখন মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন তিনি ২০১৫ সালে চীনা নেতার যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় শি জিনপিংকে আতিথেয়তা করেছিলেন। কিন্তু বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তারা ব্যক্তিগতভাবে দেখা করেননি।

চীন তাইওয়ানকে একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসেবে দেখে, যেটাকে দেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ধরা হয়- এবং সেটি অর্জনের জন্য চীন শক্তি প্রয়োগ করতেও দ্বীধা করেনি।

এক-চীন নীতির অধীনে, ওয়াশিংটন তাইপেকে কূটনৈতিকভাবে স্বীকৃতি দেয় না। তবে যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিকভাবে স্বশাসিত ওই দ্বীপে অস্ত্র বিক্রি করে যাতে তারা আত্মরক্ষা করতে পারে।

হোয়াইট হাউস বলেছে, তাইওয়ান ছাড়াও দুই নেতা জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা-সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

বাইডেন প্রশাসন চীনা আমদানির উপর ট্রাম্প-যুগের শুল্ক প্রত্যাহার করার বিষয়ে বিবেচনা করছে, এই যুক্তিতে যে এতে মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার শি জিনপিংয়ের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করেননি বলে সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বিষয়ক বিবিসির সংবাদদাতা বারবারা প্লেট উশারের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিশ্লেষকদের ধারণা জো বাইডেন এবং শি জিনপিং দু’জনই প্রকাশ্য সংঘাত এড়াতে চান।

কিন্তু কেউই তাদের প্রতিযোগী মনোভাব পরিবর্তনের কোনও চেষ্টা করেননি। বৃহস্পতিবারের এই দুই নেতার বিপরীতমুখী বিবৃতিতে সেটাই স্পষ্ট হয়।

এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে, হোয়াইট হাউস বলেছে- দুই দেশের ব্যবধানগুলো দায়িত্বপূর্ণভাবে ব্যবস্থাপনার একটা প্রচেষ্টার অংশ এই আলোচনা, যেখানে একই স্বার্থ অর্জনে দুই দেশ একসাথে কাজ করবে।

বেইজিং বলেছে, তাদের অনেক স্বার্থে মিল রয়েছে। কিন্তু দুই দেশের সম্পর্কে অবনতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে চীন।

চীনকে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ এবং ওয়াশিংটনের ‘সবচেয়ে গুরুতর দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিতে বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করেছে বেইজিং। সূত্র: বিবিসি

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *