May 2, 2024
জাতীয়

ঈদের পরপরই সম্মেলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু আ’লীগের

 

 

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরপরই জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এরই অংশ হিসেবে আট বিভাগে একযোগে চলবে সাংগঠনিক সফর। পাশাপাশি জেলা-উপজেলায় সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হবে। সাংগঠনিক সফর ও সব মহানগর-জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলন শেষে অক্টোবরে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘দলের কার্যনির্বাহী সংসদের গত বৈঠকে আগামী অক্টোবর নাগাদ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সাংগঠনিক সফর শুরু হলেও পবিত্র রমজানের কারণে সাময়িকভাবে তা স্থগিত আছে। ঈদের পর তা পুরোদমে চলবে। ইতোমধ্যে তৃণমূলে (মহানগর, জেলা, উপজেলা) ও সহযোগী সংগঠনকে সম্মেলন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এভাবে সারাদেশে সংগঠনকে গুছিয়ে এনে কেন্দ্রের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’

এরআগে, ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর দলটির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসাবে আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে এই বছরের ২৩ অক্টোবর। একারণেই অক্টোবরেই আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দলটির কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকেই। ওই বৈঠকেই দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফরের জন্য আটটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ইতোমধ্যে আটটি কমিটি স্ব-স্ব বিভাগে কাজও শুরু করেছে।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, গত এপ্রিলে কার্যনির্বাহী সংসদের পরবর্তী বৈঠকে মেয়াদোত্তীর্ণ সাংগঠনিক জেলাগুলোর কাউন্সিল শেষ করার তাগিদসহ সার্বিক প্রস্তুতির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের বেশ কিছু নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই আলোকে প্রাথমিকভাবে ৭৭টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে যেসব জেলা ও উপজেলার কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে, সেগুলোর একটি তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। গত ১১ মে খুলনা বিভাগ থেকে এই সফর শুরু হয়। কিন্তু রমজান মাসের কারণে পরে সম্মেলন স্থগিত করা হয়।

তবে, ইতোমধ্যে নীলফামারী ও রংপুর জেলার পাঁচটি উপজেলার সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ঈদের পরপরই ওইসব উপজেলার সম্মেলন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া, দলের সভাপতি সাংগঠনিক সফরে সদস্য সংগ্রহ অভিযান সম্পন্ন করা ও দলীয় কোন্দল নিরসনের জন্য নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন বলেও দলীয় সূত্র জানায়।

একাধিক দলীয় সূত্র জানায়, ঈদের পরেই সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার হবে। আগস্ট মাসজুড়ে শোকের কর্মসূচি থাকায় ওই মাসে কোনও সম্মেলন হবে না। ফলে এর আগে জুলাই মাসের মধ্যেই বেশির ভাগ জেলা সম্মেলন শেষ করা হবে।

সূত্র জানায়, যেসব জেলা-উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন হয়নি, কোন্দল বিদ্যমান, সংগঠন দুর্বল, পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই, নেতারা বয়স্ক ও অসুস্থ; সেসব জেলা ও উপজেলায় সম্মেলন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, যেসব এলাকায় সংগঠনে বিএনপি-জামায়াত বা অন্য সংগঠন থেকে অনুপ্রবেশ ঘটেছে, তাদেরসহ যারা বিতর্কিত কাজের কারণে সমালোচিত; তাদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। দলের শুদ্ধি অভিযানে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।  যোগ্য ও অযোগ্য নেতাদের তালিকাও করা হচ্ছে। সাংগঠনিক সম্পাদকদের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল­াহ বলেন, ‘দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে আটটি সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমগুলো সারাদেশ সফর করবে। আশা করি, জুলাইয়ের মধ্যে টিমগুলো রিপোর্ট দিতে পারবে। ওই রিপোর্টের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এদিকে দলের বিভাগীয় যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা জেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে তৃণমূলের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করবেন।’ সব মিলিয়ে সারাদেশে সংগঠনকে গুছিয়ে এনে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত করা হবে বলেও তিনি জানান।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *