April 26, 2024
জাতীয়

ইয়াবা এখন মিয়ানমারকেও ভোগাচ্ছে : বিজিবি প্রধান

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

ইয়াবা ঠেকাতে মিয়ানমার সহযোগিতা না করার মধ্যে এবার বিজিবি প্রধান জানালেন, এই মাদক নিয়ে এখন দেশটিও ভুগছে। ঢাকায় মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত সম্মেলন চলার মধ্যে বুধবার পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান বাহিনীর মহাপরিচালক  মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।

ভারত থেকে আসা ফেনসিডিলকে ছাপিয়ে গত দেড় দশক ধরে ইয়াবার রাজত্ব চলছে বাংলাদেশের নেশার রাজ্যে। এই ইয়াবা ট্যাবলেট আসে মিয়ানমার থেকে। ফেনসিডিল পাচার বন্ধে ভারতের সহযোগিতা পাওয়ার কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গত বছরই বলেছিলেন, ইয়াবা বন্ধে মিয়ানমার সহযোগিতা করছে না।

পিলখানায় যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সীমান্ত এলাকায় মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য বিশেষত ইয়াবা পাচার রোধে বাংলাদেশ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বজায় রাখবে এবং মিয়ানমার তাদের জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ নীতি অনুযায়ী মাদকবিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

মাদক মিয়ানমারের সমাজেও একই  প্রভাব ফেলছে বলে দেশটির প্রতিনিধি দল জানায়। তাই মাদক পাচার রোধে ‘পূর্ণ সহযোগিতার’ আশ্বাসও তারা দেয় বিজিবিকে।

বিজিবি প্রধান সাফিনুল বলেন, মিয়ানমারও অনেক ইয়াবা জব্দ করে তা ধ্বংস করেছে। তার চাক্ষুস প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। আমরা তাদের মাদকবিরোধী অভিযান আরও বেগবান করার অনুরোধ জানিয়েছি।

টেকনাফের নাফ নদী দিয়ে বর্তমানে ইয়াবা পাচার অনেক কমেছে দাবি করে তিনি বলেন, অন্যান্য পথ দিয়ে ইয়াবা বাংলাদেশে ঢোকে। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির পাঁচ দিনের এই সম্মেলন শুরু হয় গত ৫ জানুয়ারি।

মিয়ানমারের চিফ অব পুলিশ জেনারেল স্টাফ, পুলিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মায়ো থান তাদের ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিজিবির নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেজর জেনারেল সাফিনুল। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয় যে তার দেশের কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাংলাদেশে অবস্থান করছে। কিন্তু আমরা তাদের জানিয়েছি, এ ধরনের কোনো সন্ত্রাসী গ্রæপ এখানে নেই। আমাদের সরকার এদেশের ভূমি ব্যবহার করে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে দেবে না, বলেন বিজিবি প্রধান।

উভয় পক্ষই যে কোনো ধরনের অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম বা প্রবেশ এবং সীমান্ত লঙ্ঘন রোধে সম্মত হয়েছে। পাশাপাশি অজ্ঞতাবশত সীমান্তরেখা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে উভয়ে দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী তাদেরকে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রেও মতৈক্য হয়েছে। মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে শরণার্থী জীবন কাটাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উভয় পক্ষই আন্তঃদেশীয় অপরাধ, অস্ত্র চোরাচালান, মানব পাচার, পণ্য চোরাচালান ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একে অন্যকে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে। সীমান্তে গোলাগুলি বা গুলি চালানোর ঘটনা যদি ঘটে, তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একে অন্যকে জানাতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ হয়েছে বিজিবি ও বিজিপি। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পরবর্তী সীমান্ত সম্মেলনটি ২০২০ সালের মে-জুন মাসে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হবে।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *