April 19, 2024
আঞ্চলিকফিচারলেটেস্ট

আদর্শিক রাজনীতির নতুন অধ্যায় শেখ সুজন

এইচ. এম. এ. হক বাপ্পি : স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিলে ১৯৭২ সালের ৭ই এপ্রিল নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন,

“জনসেবার মধ্য দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে”
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চেতনা এবং আদর্শই ছিল জনকল্যাণ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে এদেশের বুকে যারা নিরবে-নিভৃতে জনসেবায় নিয়োজিত রয়েছেন তাদেরই একজন খুলনা মহানগর যুবলীগের যুগ্ন-আহবায়ক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন।
করোনা ভাইরাস মহামারীর এই মহা-দুর্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনার অসহায় জনগনের পাশে দাঁড়াবার মানবিক আহ্বানকে বাস্তবায়নকল্পে পিতার অবর্তমানে পারিবারিক এবং রাজনৈতিক অভিভাবক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র বাগেরহাট-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন  এবং মাননীয় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপির সার্বিক নির্দেশনায় ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগ এর সভাপতি আলহাজ্জ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক, মহানগর আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক এম. ডি. এ বাবুল রানার পরামর্শে এখন পর্যন্ত খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন পেশার কর্মহীন প্রায় ১০ হাজার পরিবারের দোরগোড়ায় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তার এই উপহার পৌঁছে দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, খুলনা মহানগর শাখার যুগ্ম-আহবায়ক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন।
খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি শেখ সুজন তার খাদ্য সহায়তা বিতরণের ক্ষেত্রেও পরিচয় দিয়েছেন দূরদর্শিতার। করোনা ভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা বিতরণে তিনি খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন পেশার কর্মহীন মানুষদের কাছে আলাদা আলাদা ভাবে সহায়তা পৌঁছানোর অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন যেমন-

১। কর্মহীন, অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য পবিত্র শবে-বরাত উপলক্ষ্যে খাদ্য সহায়তা প্রদান।

২৷ ৮৩৪ জন ইমাম মুয়াজ্জিন এবং খাদেমের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান।

৩। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান।

৪। করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়া রোগীদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান।

৫। করোনা মহামারীর ফলে কর্মহীন সেলুন কর্মচারীদের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদান।

৬। তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মানুষদের খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান।

৭। নদী বিধৌত খুলনার নদী পাড়ের মানুষ এবং এ সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান।

৮। লন্ড্রী ব্যবসায়ী এবং এ সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান।

৯। মুদি দোকানদার এবং এ সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান ইত্যাদি।

১০৷ এছাড়াও সরাসরি বলতে না পারা মধ্যবিত্ত মানুষকে আর্থিক সহয়তা তিনি প্রতিনিয়ত করে চলেছেন৷

তার বিতরণকৃত খাদ্য সামগ্রী সমূহের মধ্যে ছিল- চাল, পোলাও চাল, ডাল, তেল, আটা, লবন, পিয়াজ, লাউ, কুমড়া, পটল, ঢেড়শ,বরবটি, টোষ্ট, সেমাই, চিনি, দুধ এবং অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচাবাজার এবং মুদি সামগ্রী। এছাড়া পুষ্টিসমৃদ্ধ সামগ্রীর মধ্যে ছিল- আনারস, পেয়ারা, মালটা, বিষ্কুট, চানাচুর, চা-পাতা, লেবু, দুধ, চিনি, হরলিকস, মিষ্টি ও অন্যান্য মৌসুমী ফলমূল এবং শুকনো খাবার।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক উপ-পাঠাগার সম্পাদক, এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করা বিচক্ষণ এই সংগঠক দারুন দক্ষতার সাথে কর্মহীন মানুষদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তার সুষম বিতরণ নিশ্চিত করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, শেখ সোহেল এবং শেখ জালাল উদ্দিন রুবেলের কাছে শিখেছেন কিভাবে তথাকথিত রাজনৈতিক ধারার বাইরে গিয়ে সৎ, স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির আদর্শে কাজ করতে হয়। বর্তমানে রাজনীতির নামে অনেকেই যেখানে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত ঠিক তখনই শেখ সুজন তার রাজনৈতিক শিক্ষা, আদর্শ এবং চেতনাকে কাজে লাগিয়ে মহানগরীর রাজনীতিতে ব্যতিক্রমী কিছু করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজনের পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ শহিদুল হক ছিলেন ষাটের দশকে তুখোড় ছাত্রনেতা এবং খুলনা মহানগর শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। “৭৫ পরবর্তী সময়েও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পরে তার আস্থাভাজন হিসেবে তিনি দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন।

পিতার মৃত্যুর পরে শেখ সুজনের বড় ভাই শেখ শাহাদাৎ হোসেন স্বাধীন রাজনীতির মাঠে জোড়ালো ভাবে কাজ শুরু করেন৷ আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগ এবং যুবলীগ কে সংগঠিত করতে কাজ করে গেছেন৷ হঠাৎ করে শেখ স্বাধীন  মৃত্যুবরণ করলে  রাজনীতির মাঠে প্রবেশ করেন শেখ সুজন৷ যেহেতু পারিবারিক ভাবেই তার পরিবার রাজনীতির সাথে যুক্ত তাই তিনিও বাইরে থাকতে পারেননি৷ নেমে পড়েন পিতা মুজিবের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার কাজে৷

খুলনার রাজনীতিতে শেখ সুজনের জনপ্রিয়তার মূল কারণ পরমতসহিষ্ণু-কর্মীবান্ধব রাজনীতি এবং কোন রকম দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দেয়া।একজন নেতার বিরুদ্ধে যে সকল অন্যায় এবং অনৈতিকতার অভিযোগ উঠতে পারে সেগুলো থেকে তিনি নিজেকে সযত্নে দূরে রেখেছেন।

মূলত নিভৃতচারী, খুব প্রয়োজন ছাড়া কথা না বলা এবং যতটুকু বলেন তা সম্পূর্ণ আস্থার জায়গা থেকে বলেন- এমন একটি ভাবমূর্তি  খুলনা মহানগরীর ছাত্রলীগ, যুবলীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী সহ জন-সাধারণের ভেতরে তিনি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক নির্দেশনা ও ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয়ের দর্শনকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে শেখ সুজনের সততা, নিষ্ঠা এবং দায়িত্বশীল আচরণের মতো গুণগুলোই তাকে রাজনীতিতে ভিন্নধর্মী একটি চরিত্র হিসেবে উপস্থাপিত করেছে।

আশা করি ভবিষ্যতে তার এসব ভালো কর্মকান্ড দিয়েই  তিনি সকলের হৃদয়ে থাকবেন সর্বদা এবং একই সাথে তার উত্তোরত্তর সাফল্য কামনা করি৷
লেখক: কলামিস্ট, সাহিত্যিক ও সুচিন্তক এম,এইচ,আর,ডি,আই,আর (জাবি)
এম,এস,এস (সমাজ কল্যাণ) ঢাবি

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *