৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে কবি আল মাহমুদ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে গত ৮ ফেব্র“য়ারি তাকে ধানমন্ডি শঙ্করের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে পরের দিন আইসিইউতে নেয়া হয়।
ইবনে সিনার আইসিইউ’র ইনচার্জ ডা. মাজহারুল জানান, কবি আল মাহমুদের বয়স বিবেচনায় নিতে হবে। তার নিউমোনিয়ার উন্নতি হতে সময় লাগবে। তিনি বলেন, ‘নিউমোনিয়া ছাড়াও কবির হার্টে সমস্যা, বার্ধক্যজনিত রোগ ছাড়াও একাধিক প্রত্যঙ্গ কাজ করছে না। এজন্য তাকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখনই নির্দিষ্ট কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।’
আইসিইউ’র ইনচার্জ আরও বলেন, ‘কবির অবস্থা স্থিতিশীল। এজন্য আমরাও বেশ আশাবাদী। সব চেষ্টা করা হচ্ছে, বাদবাকি আলাহর ইচ্ছা। শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেই তাকে এইচডিইউতে নেয়া হবে।’ কবি আল মাহমুদ হাসপাতালে নিউরো স্পেশালিস্ট অধ্যাপক ডা. আব্দুল হাইয়ের তত্ত¡াবধানে চিকিৎসাধীন।
কবি আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামের মোলাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিতাস নদীর পাড়েই বেড়ে ওঠা। লেখালেখি শুরু সপ্তম শ্রেণি থেকে। এরপর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৪ সালে গণকণ্ঠের সম্পাদক থাকাকালে কারাবরণ করেন। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক পদ থেকে অবসর নেন তিনি।
নগরজীবনে কিংবদন্তি এই কবি রাজধানীর মগবাজারে বসবাস করছেন। বার্ধক্যে এসে বছরেরও বেশি হলো বাকশক্তি হারিয়েছেন। অবশ্য তারও বেশ আগে থেকেই কবি নিজ হাতে লিখতে পারেন না। বলে বলে যান, অন্যরা তা শুনে লিখে দেন। এখন সেটিও বন্ধ। এরই মধ্যে তিনি গত শুক্রবার একেবারেই শয্যাশায়ী হয়ে পড়লেন।
কবি আল মাহমুদের রচনার মধ্যে রয়েছে, কাব্যগ্রন্থ লোক লোকান্তর, কালের কলস, সোনালী কাবিন, মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো, অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না, বখতিয়ারের ঘোড়া, একচক্ষু হরিণ, দোয়েল ও দয়িতা, দ্বিতীয় ভাঙ্গন, নদীর ভিতরে নদী, না কোনো শূন্যতা মানি না, বিরামপুরের যাত্রী, বারুদগন্ধি মানুষের দেশ, সেলাই করা মুখ, তোমার রক্তে তোমার গন্ধ ইত্যাদি।
কবির সাড়া জাগানো উপন্যাস কাবিলের বোন, পানকৌড়ির রক্ত, উপমহাদেশ, ডাহুকি, যেভাবে বেড়ে উঠি, আগুনের মেয়ে, যমুনাবতী, চেহারার চতুরঙ্গ, যে পারো ভুলিয়ে দাও, ধীরে খাও অজগরী ইত্যাদি। সাহিত্যকর্মের জন্য আল মাহমুদ একুশে পদক, বাংলা একাডেমিসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।