ব্রেক্সিট নিয়ে এমপি’দের কাছে সময় চাইবেন টেরিজা মে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদে নিজের খসড়া ব্রেক্সিট পরিকল্পনার বিতর্কিত অংশে পরিবর্তন আনতে যুক্তরাজ্যের আইনপ্রণেতাদের কাছ থেকে আরো সময় চাইবেন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে চুক্তিতে শেষ মুহূর্তের পরিবর্তনের জন্য রাজি করানোর চেষ্টার পর মে এ সপ্তাহেই এমপি’দের কাছে এ সময় চাইবেন।
বিবিসি জানায়, ফেব্র“য়ারির শেষ নাগাদ চুক্তি প্রস্তুত না হলে বিকল্প বেক্সিট পরিকল্পনার ওপর আরেকটি ভোটের প্রতিশ্র“তি পার্লামেন্টকে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যেতে (ব্রেক্সিট) ৫০ দিনেরও কম সময় হাতে আছে। ২০১৯ সালের ২৯ মার্চেই ব্রেক্সিট সম্পন্ন হওয়ার কথা। এ দিনটিকে সামনে রেখে ব্রেক্সিট চুক্তির বিতর্কিত আয়ারল্যান্ড ব্যাকস্টপের অংশটিতে পরিবর্তনের চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মে।
বুধবারের মধ্যে কোনো পরিবর্তন ঘটাতে না পারলে মে এর জন্য এমপি দের কাছে আরো সময় চাইবেন। তখন তিনি বিতর্কের জন্য একটি নিরপেক্ষ প্রস্তাব পেশ করবেন।
বিরোধী লেবার পার্টি নিজেদের একটি ব্রেক্সিট পরিকল্পনার প্রস্তাব দিচ্ছে। এজন্য পার্লামেন্টের অনুমোদন আদায় করতে দলটি একটি খসড়া সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করেছে। এ সপ্তাহে ওই সংশোধনী প্রস্তাবের উপর ভোট হবে বলে জানান ছায়া ব্রেক্সিট মন্ত্রী কেইর স্টারমার।
তিনি বলেন, যদি পার্লামেন্টে ওই সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন পায় তবে এ মাসের শেষে বিকল্প বেক্সিট পরিকল্পনায় ভোট নিশ্চিত হয়ে যাবে। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী মে ‘দিনরাত এক করে তার ব্রেক্সিট চুক্তি বাঁচাতে চাইছেন’ বলেও অভিযোগ করেন স্টারমার।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টের সামনে বিকল্প কোনো পথ খোলা রাখতে চাইছেন না। তিনি পার্লামেন্টকে তার চুক্তি বেছে নিতে বাধ্য করতে চাইছেন, নতুবা কোনো চুক্তি ছাড়াই সম্পর্কোচ্ছেদ। এক বছরের বেশি সময় ধরে ইইউ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর গত বছর নভেম্বরে মে তার খসড়া ব্রেক্সিট পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিলেন।
যা জানুয়ারিতে পার্লামেন্টে বিপুল ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়। আধুনিক যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে এর আগে কোনো প্রধানমন্ত্রীর তোলা প্রস্তাব এত বড় ব্যবধানে হারেনি। ওই ভোটে হারের পরদিন মেকে অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
বড় ব্যবধানে হারের পর মে তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনার যেসব অংশ নিয়ে এমপিদের আপত্তি আছে ওই সব অংশ পরিবর্তনের জন্য ইইউ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন। যদিও ইইউ নেতারা খসড়া চুক্তিতে পরিবর্তনের আলোচনায় নতুন করে বসতে বিন্দুমাত্র আগ্রহী নন বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন।
মে’র খসড়া চুক্তির বেশিরভাগ অংশ এমপি’রা সমর্থন করলেও তাদের সবচেয়ে বড় আপত্তি আয়ারল্যান্ড সীমান্ত ব্যবস্থা নিয়ে, যা চুক্তিতে ‘আইরিশ ব্যাকস্টপ’ নামে পরিচিত। বিচ্ছেদের পর যুক্তরাজ্যের অংশ নর্দান আয়ারল্যান্ড এবং ইইউ সদস্য স্বাধীন রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের মধ্যে সীমান্ত বাণিজ্য কেমন হবে তা নিয়ে মূল দ্ব›দ্ব চলছে।
ইইউ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ২৯ মার্চের পর এটা একমাত্র সীমান্ত হবে। মে’র খসড়া চুক্তিতে সীমান্ত ব্যবস্থায় তেমন কোনো পরিবর্তনের কথা বলা হয়নি। নির্ধারিত সময় সীমা মধ্যে যদি যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট চুক্তিতে উপনীত হতে ব্যর্থ হয় তবে সেক্ষেত্রে হয়ত তাদের কোনো চুক্তি ছাড়াই সম্পর্কোচ্ছেদ করতে হবে। যা যুক্তরাজ্যের এমপি’রা চাইছেন না। বরং প্রয়োজনে চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের চাইতে তারা ইইউ’তে থেকে যাওয়ার বা দ্বিতীয় গণভোট আয়োজনের পক্ষে।