৩০ শতাংশ প্রসিকিউশন স্বাধীন করা হবে : আইনমন্ত্রী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনার জন্য পাবলিক প্রসিকিউশন সার্ভিসের ৩০ শতাংশ স্বাধীন করা হবে। একইসঙ্গে আদালতের আইন কর্মকর্তাদের (পিপি-জিপি) বেতনের আওতায় আনা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় দিনের পঞ্চম কার্য অধিবেশনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী বলেন, এখন যে প্রসিকিউশনস সার্ভিস আছে, সেখান থেকে ৩০ শতাংশ ইনডিপেনডেন্ট (স্বাধীন) করার চিন্তা করছি। একইসঙ্গে আদালতের আইন কর্মকর্তাদের (পিপি-জিপি) বেতনের আওতায় আনার বিষয়টি বিবেচনা করছি। এই প্রস্তাব আমি অলরেডি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এসবই আজকের সম্মেলনে জেলা প্রশাসকদের জানানো হয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, হাইকোর্টের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের যোগাযোগ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের নিয়ে একটি টিম গঠন করা হবে। হাইকোর্টে যে সব মামলা মোকাদ্দমা চলমান আছে, সেগুলোতে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে একটি কমিউনিকেশন গ্যাপ আছে, সেটা আজকের আলোচনায় বেরিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, এই কমিউনিকেশন গ্যাপ দূরীকরণে যে পদক্ষেপগুলো নিতে হবে, আমি সেগুলো ডিসিদের বলেছি। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে হাইকোর্টে যেসব মামলা হয়, সেসব মামলা সর্ম্পকে যেন জেলা প্রশাসকরা তড়িত জানতে পারেন। আমি এখন বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলবো। পাঁচ থেকে সাতজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে দেবো। তারা হাইকোর্টের মামলাগুলো সর্ম্পকে ৬৪ জেলার প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে। এতে কমিউনিকেশন বাড়বে এবং মামলা তড়িত নিষ্পত্তি হওয়ার একটি ব্যবস্থা হবে।
মন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসকদের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার চাওয়ার বিষয়ে আমি বলেছি, এই ক্ষমতা দেওয়ার জন্য আইন সংশোধন করতে হবে। আইন সংশোধন করতে হলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দেখা হবে প্রয়োজন কি-না।
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ডিসিদের বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সেটা আমার জানার কথা না। আমার মনে হয় ডিসিদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির প্রথম আলোচনা। প্রধান বিচারপতি সে ধরনের দিক নির্দেশনা দেবেন। এটাই হবে ভবিষ্যতে আলাপ আলোচনার একটি প্রেক্ষিত।
জেলা প্রশাসকরা প্রতি বছর সম্মেলনে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার চান, বিষয়টি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারপরও কেন চান সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিসিরা প্রত্যেকবারই জানতে চান, এটা কেন হচ্ছে না। তাই তারা বিষয়টি উত্থাপন করেন। আমরাও বলি এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অনেক সময় দেখা যায়, গতবার যিনি জেলা প্রশাসক ছিলেন, এবার তিনি নেই। হয়তো এ কারণে তাদের কাছে এ প্রশ্ন উঠে। প্রশ্ন উঠলে আমাদের প্রত্যেকবারই এই জবাব দিতে কোনো আপত্তি নেই।
কুমিলার আদালতে এক আসামির ছুরিকাঘাতে আরেক আসামির মৃত্যুর বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এক আসামি আরেক আসামি মামাতো-ফুফাতো ভাই। যে হত্যা মামলায় তারা আসামি, সেটা নিয়ে একজন আরেকজনকে বলেছিল তোমাদের কারণে আমি এই মামলায় জড়িয়েছি। এ ঘটনার পর সারাদেশে আদালতের নিরাপত্তা বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। এসময় ৬৪ জেলার প্রশাসক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, লেজিসলেটিভ, সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, নিবন্ধন পরিদফতরের মহাপরির্দশক, বিভাগীয় কমিশনার ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।