২৪ ঘণ্টায় নতুন কেউ আক্রান্ত হননি : আইইডিসিআর
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কারও মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েনি বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর। গতকাল সোমবার আইইডিসিআরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনজন আক্রান্ত হওয়ার খবর জানানোর পর ২৪ ঘণ্টায় ৫০৯টি ফোন কল এসেছে আইইডিসিআরের হটলাইনে। তার মধ্যে ৪৮৯টি কলই ছিল নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে। এ সময় ৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তাদের কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি। তার মানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখনও তিনজন।
আইইডিসিআর রোববার এক ব্রিফিংয়ে দেশে প্রথমবারের মত তিনজনের নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য প্রকাশ করে। ওই তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ স¤প্রতি ইতালির দুটি শহর থেকে দেশে ফেরেন। তাদের মধ্যে একজনের সংস্পর্শে এসে পরিবারের আরেক নারী সদস্য আক্রান্ত হন। যেসব দেশে নভেল করোনাভাইসের প্রকোপ বেশি, সেখান থেকে কোনো প্রবাসী বাংলাদেশি ফিরে এলে তাদের ১৪ দিন বাড়িতে অবস্থান করার পরামর্শ দেন অধ্যাপক ফ্লোরা।
এ বিষয়ে স্বজনদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, এই চৌদ্দ দিন বাড়িতে অবস্থানের ক্ষেত্রে স্বজনদেরও সচেতন থাকতে হবে। তিনি যদি ভুল করে বাড়ি থেকে বের হয়েও যান, তাকে মনে করিয়ে দিতে হবে যে তিনি কোয়ারেন্টিনে আছেন।
বিদেশ ফেরতদের সঙ্গে অনেক সময় যে বিরূপ আচরণ করা হচ্ছে, সে বিষয়টি তুলে ধরে ডা. ফ্লোরা বলেন, এর ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে। আমরা খবর পাচ্ছি শঙ্কিত হয়ে প্রতিবেশী এবং বাড়িওয়ালারা তাদের (বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের) সঙ্গে বিরূপ আচরণ করছেন। আমরা যদি তাদের সহযোগিতা না করি তাহলে তাদের বাসা থেকে গিয়ে হোটেলে বা বাইরে থাকতে হবে। আর তারা যদি সংক্রমিত হয় তাহলে এটি আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে। সেজন্য তারা যেন বাড়িতে থাকেন সে বিষয়ে সবার সহযোগিতা করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বর্ধন জং রানা উপস্থিত ছিলেন এ সংবাদ সম্মেলনে।
করোনাভাইরাস সবখানে ছড়িয়ে গেছে, এ কারণে বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়ায় অবাক হওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন ডা. রানা। তিনি বলেন, এখন সবাইকে নিয়ে এটা প্রতিরোধ করতে হবে। কতটা আগে রোগটি শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটি হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশকে এখন এই চ্যালেঞ্জটি নিতে হবে।
এটা শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একার কাজ নয়। মন্ত্রণালয়, সব বিভাগ, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তি পর্যায়েও এগিয়ে আসতে হবে। বিষয়টি নিয়ে গুজব, ভীতি যাতে না ছড়ায় সে বিষয়ে গণমাধ্যমকেও ভূমিকা রাখতে হবে।