May 4, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

২০ দলীয় জোটের পরিধি বাড়ানোর ইঙ্গিত মির্জা ফখরুলের

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোকে ধৈর্য ধরার আহŸান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জোট ছেড়ে না যেতে শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের অনুরোধও করেন। আগামীতে জোটের পরিধি আরও বাড়ানোর ইঙ্গিতও দেন তিনি।

গতকাল সোমবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে শরিক দলগুলোর নেতাদের তিনি এই ইঙ্গিত দেন। বৈঠকে উপস্থিত শরিক দলগুলোর একাধিক নেতা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৬ মে ২০ দলীয় জোট ছেড়ে যায় আন্দালিভ রহমান পার্থের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পার্টি (বিজেপি)। এই প্রসঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, মির্জা ফখরুল বৈঠকে উপস্থিত জোট নেতাদের বলেছেন, ‘পার্থের সঙ্গে আমাদের যোগোযোগ রয়েছে। আশা করি, তিনি ফিরে আসবেন।’

বৈঠকে শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০ দলীয় জোটের ঐক্য আরও শক্তিশালী করে গণতন্ত্র রক্ষায় জোটের বাইরে আরও যেসব দল আছে, সেসব দলকে নিয়ে একযোগে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি দলের শীর্ষ নেতা জানান, বৈঠকে উপস্থিত জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য আব্দুল হালিমের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের দলের মধ্যে তো একটা টানাপড়েন চলছে। ধৈর্য ধরে এসব মোকাবিলা করুন।’ জবাবে হালিম বলেন, ‘আশা করি, আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।’ শরিক দলের একজন শীর্ষ নেতা জানান, পার্থের জোট ছাড়া প্রসঙ্গে বৈঠকের শুরুতে আলোচনা উঠলে, মির্জা ফখরুল বলেন, তার সঙ্গে আমাদের এখনও যোগাযোগ রয়েছে। আশা করি, তিনি ফিরেও আসতে পারেন। আগামীতে ২০ দলীয় জোটের পরিধি আরও বাড়তেও পারে।’ তবে, জোটের পরিধি কবে নাগাদ বাড়তে পারে, সে বিষয়ে কোনো সময়সীমা নির্ধারণ হয়নি বলেও এই নেতা জানান।

কৃষকদের ধানের দাম বৃদ্ধির দাবিতে ও নারী শিশু নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণ বন্ধের দাবিতে কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ২০ দলীয় জোট।

এই বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ধানের মূল্য কম হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ২০ দলীয় জোট এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এ নিয়ে শিগগিরই ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবো। সারাদেশে ২০ দলের উদ্যোগে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে আমাদের।’

দেশে আইনের শাসন না থাকায় নারী শিশু নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ বেড়েছে বলে দাবি করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকার জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে। এসব বিষয়ে ২০ দলীয় জোট ও বিএনপি দলীয়ভাবে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

জোটের মধ্যে সমন্বয়ের লক্ষ্যে বেশি বেশি সভা ও নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য জোটের শরিক নেতারা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছেন। তারা মরে করেন, বিচারের নামে প্রহসন করে খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে রাজনৈতিক নিষ্ঠুরতার বড় উদাহরণ হলো খালেদা জিয়ার কারাবন্দিত্ব।’

জোটের একটি শরিক দল জোট ছাড়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে, এই বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সেই নেতা তো এখন বলছেন, কোনও আল্টিমেটাম দেননি।’

পার্থের জোট ছাড়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের জোটের রাজনৈতিক ইতিহাস হলো অনেকে চলে যান, আবার অনেকে ফিরেও আসেন। আমরা মনে করি, বিজেপি ২০ জোটের প্রথম থেকেই আছে। আন্দোলন, সংগ্রাম, লড়াই, নির্বাচন—সবই আমরা একসঙ্গে করেছি। কাজেই আমরা মনে করি, যিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে চলে গেছেন, তাকে এখনও প্রবীণ নেতা বলা যায় না। কাজেই নিশ্চয় ভুল বুঝে আমাদের প্রতি তার কোনও ক্ষোভ থাকলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সেটা দূর হবে।’ এই নেতা ২০ দলীয় জোটে ফিরে আসবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *