২০ ছাত্রীকে ধর্ষণের বর্ণনা দিলেন শিক্ষক আশরাফ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড হাই স্কুলের ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে ধর্ষণকারী স্কুলের সহকারী শিক্ষক ভয়ঙ্কর ধর্ষক আরিফুল ইসলাম ওরফে আশরাফ দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ূন কবীরের আদালতে তিনি এ জবানবন্দি দেন। নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
র্যাব-১১’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন জানান, আটক শিক্ষক আরিফুল ইসলামের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিভাইস জব্দ করে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন স্কুলের নির্যাতিত সব ছাত্রীর পরিবার এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপর মামলাটি করে র্যাব।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শাহীন শাহ পারভেজ জানান, কান্দাপাড়া এলাকার অক্সফোর্ড হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফুল আপত্তিকর ছবি তুলে ও গোপন ভিডিও ধারণ করে ২০ জনের বেশি ছাত্রীকে ব্যাকমেইল করে প্রত্যেককে একাধিকবার ধর্ষণ করে। গত ২৪ জুন শিক্ষক আরিফুল ইসলাম স্কুলের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে টার্গেট করে তাকে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপনের জন্য প্রস্তাব দেয়। ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি তার বাবা-মা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানায়।
পরে তারা বিষয়টি র্যাব-১১ কার্যালয়ে অবহিত করলে গত ২৭ জুন র্যাবের একটি টিম স্কুলে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। এ ঘটনায় ডিএডি আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে শিক্ষক আরিফুল ইসলাম ও তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। এছাড়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেন।
ওসি আরও জানান, দুটি মামলায় শিক্ষক আরিফুল ইসলামের তিনদিন করে ছয়দিনের রিমান্ডে ছিল। রিমান্ডের তিনদিনের মাথায় তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবিন্দ দিতে রাজি হওয়ায় তাকে সিনিয়র জুুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবিরের আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে একাধিক শিক্ষার্থীকে ফাঁদে ফেলে, পরীক্ষায় ফেল করানো ভয় দেখিয়ে, কাউকে বেশি নম্বর দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে, আবার ফেল করা শিক্ষার্থীকে বাসায় ডেকে এনে অন্যের খাতা দেখে লেখার সুযোগ দিয়ে ধর্ষণ করে বলে স্বীকার করেছেন ওই শিক্ষক। জবানবন্দি গ্রহণের পর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।