May 4, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

১৪ দিনেও গ্রেফতার হয়নি ইউপি চেয়ারম্যান সাধন অধিকারীসহ ৫ জন

ফলোআপ: সরকারি কাজে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা

দ. প্রতিবেদক
খুলনার রূপসা উপজেলায় সরকারি রাস্তা সংস্কারের কাজে চাঁদা না পেয়ে হামলার অভিযোগে ঘাটভোগ ইউপি চেয়ারম্যান সাধন অধিকারীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলেও এখনো কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলা দায়েরের ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও মামলায় আশানুরূপ কোন অগ্রগতি নেই। এ নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন মামলার বাদী আব্দুর রউফ শিকদার। যদিও পুলিশ বলছে- আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের আলাইপুর হতে পালেরহাট পর্যন্ত জিসি রাস্তা সংস্কার কাজ চলছে। রাস্তার ঠিকাদার ইদ্রিস শেখের নিকট থেকে সাব ঠিকাদার হিসেবে রাস্তায় বালু ভরাটের কাজ নেয় আব্দুর রউফ শিকদার। কাজ করার অবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যান সাধন ও তার অনুসারীরা বিভিন্ন সময় বাদীর নিকট চাঁদা দাবী করে না পেয়ে কাজও বন্ধ করে দেয়। সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই রাত আনুমানিক ৮টার সময় আলাইপুর ব্রীজের পশ্চিমপার্শ্বে সাধনের নেতৃত্বে আসামিরা বাদীর নিকট ১ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় চেয়ারম্যান হুমকি দেয় শালাকে জীবনে শেষ করে দে! কথা শুনে আসামি হিরণ তার হাতে থাতা হকিস্টিক দিয়ে হত্যার মাথায় আঘাত করে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে রউফের ডান হাতের বাহুতে গুরুতর জখম হয়। এসময় অন্য আসামিরা তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করিয়া জখম করে। এসময় বাদীর মারপিট ঠেকাতে তার ভাই আজিজুল ও পিতা বজলুর রশিদ কেও তারা মারপিট করে জখম করে চলে যায়। স্থানীয়রা তাদের উদ্বার করে রূপসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুর রউফ শিকদার বাদী হয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে রূপসা থানায় মামলা দায়ের করেন। যার নং ০৫, তারিখ: ১৫/০৭/২০২০। ধারা: ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩৮৫/৩০৭/৫০৬/১১৪ পেনাল কোড। মামলায় আসামীরা হলেন- ঘাটভোগ ইউনিয়নের ডোবা গ্রামের মৃত গুরুদাস অধিকারীর ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান সাধন অধিকারী, একই ইউনিয়নের আলাইপুর গ্রামের আজগর শিকদারেরর ছেলে হিরণ শিকদার (২৫), হিরক শিকদার (৩০), আজগর শিকদার (৬০) ও তকছেদ শিকদারের ছেলে লিটন শিকদার (২৬)।
এদিকে মামলা দায়ের হওয়ার ১৪ দিন পরেও এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে- আসামীদের মধ্যে একজন জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতার ভাই থাকায় এবং অন্যরাও প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছেনা। ফলে প্রতিনিয়ত নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন মামলার বাদী।
এ বিষয়ে রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা জাকির হোসেন জানান, ‘এজাহারভুক্ত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেছে। আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করতে সময় লাগছে। ১নং আসামী ইউপি চেয়ারম্যান হলেও কেউই আইনের উর্ধ্বে নন, আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
এ বিষয়ে রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন আক্তার বলেন, ‘সরকারি রাস্তা সংস্কারের কাজে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে, শুনেছি। এখন এটি পুলিশের হাতে। তবে আসামী যারাই হোক তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় খুলনায় মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির নাম উঠে আসে। যার মধ্যে ঘাটভোগ ইউপি চেয়ারম্যান সাধন অধিকারীর নাম রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে রূপসা উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী’র প্রতিশ্রুত অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পের আঠারোবেকি নদী খনন প্রকল্পে হামলার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় প্রকল্পের সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাইমান ট্রেডার্সের ম্যানেজারসহ চারজন আহত হন।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *