December 28, 2024
জাতীয়

হুমকি দিলে উচ্ছেদের গতি দ্বিগুণ হবে : ভূমিমন্ত্রী

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ বন্ধের জন্য হুমকি দিলে দ্বিগুণ গতিতে এই কার্যক্রম চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরুর পর অভিযান পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেটদের ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ভূমিমন্ত্রী শনিবার বিকালে নগরীর মাঝিরঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদী তীর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শন করতে গেলে ওই বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।
এ ধরনের হুমকি আমলে নেওয়ার কিছু নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, হুমকি দিয়ে কেউ পার পাবে না। তারা কাকে হুমকি দিচ্ছে, কে হুমকি দিচ্ছে? আমাদের সিকিউরিটি আগের চেয়ে অনেক বেশি স্ট্রং। অভিযান নিয়ে হুমকি দিলে কাজের গতি দ্বিগুণ হবে।
উচ্ছেদ কার্যক্রমে সন্তোষ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কর্ণফুলী নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের প্রথম পর্যায়ে এ পর্যন্ত ১০ একরের মতো জায়গা উদ্ধার হয়েছে। এসব জায়গায় পরিকল্পনা করে ‘ভালো কিছু’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সে পর্যন্ত নগরবাসীকে ধৈর্য্য ধরার আহŸান জানান তিনি।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত সোমবার থেকে কর্ণফুলীর দুই তীরে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
পতেঙ্গা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার তাহমিলুর রহমান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে শুক্রবার পর্যন্ত গত পাঁচ দিনে সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত নদী তীর থেকে ২৩০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে অন্যান্য এলাকাতেও অভিযান চলবে। কোনো এলাকায় অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। উদ্ধার করা জায়গায় দৃষ্টিনন্দন কিছু করা হবে।
চট্টগ্রামের সন্তান সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে শুধু নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়নি, ওই এলাকার পাঁচটি খালের মুখ ওপেন করা গেছে। এতে করে নগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো হবে এবং নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সহায়কও হবে।
কর্তফুলি নদীর গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এ নদী বাঁচলে চট্টগ্রাম বাঁচবে। এটিকে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে সবাইকে। এজন্য প্রত্যেককে তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহŸান জানান তিনি।
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কর্ণফুলী নদী সুন্দর হওয়ার পাশাপাশি বড় বড় কার্গো জাহাজ নদীতে আসতে পারবে এবং তাতে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পতেঙ্গা এলাকার মোহনা থেকে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় কর্তফুলির দুই তীর থেকে দুই হাজার ১১২টি স্থাপনা উচ্ছেদ করার কথা রয়েছে জেলা প্রশাসনের।
চার-পাঁচ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে কর্তফুলি তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ফের শুরু হবে বলে জানান মন্ত্রী জাবেদ। অভিযানের মধ্যে সদরঘাট এলাকায় কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের মালিকানাধীন একটি ভবন পুরোপুরি অপসারণ না হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি মাছের কোল্ড স্টোরেজ বলে আমরা জেনেছি। এতে কয়েক হাজার টন মাছ রাখা হয়।
অভিযান চালাতে গেলে প্রচুর সম্পদ যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে আমরা নজর দিচ্ছি। তাদের সাথে আলাপ করে সময় দিয়ে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হবে। কোনো অবৈধ স্থাপনা থাকতে পারবে না, চলে যাবে।
এ সময় উপস্থিত চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে দেড় কিলোমিটার এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়েছে। বর্তমানে উচ্ছেদের পর থাকা আবর্জনা সরানোর কাজ চলছে। এসব কাজ শেষ করে আগামী পাঁচদিনের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করা যাবে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *