May 7, 2024
খেলাধুলা

হাথুরুর সাথে সাক্ষাতের পর যা বললেন পাপন

সবার চোখ ছিল তার দিকে। বাংলাদেশে হেড কোচ হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে এসে কী ভাবছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে? তার নতুন করে বাংলাদেশের কোচ হয়ে ফেরার গল্পটাইবা কী? এ বছরই ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। কী লক্ষ্য-পরিকল্পনা হাথুরুর? এ সব জানতে উন্মুখ ছিলেন সবাই।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামার আগে শেরে বাংলার কনফারেন্স হলে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বসে অনেক কথাই বলেছেন হাথুরুসিংহে। ওদিকে প্রেস মিট শেষ হওয়ার পর হাথুরুর সঙ্গে দেখা করতে বোর্ডে এসেছিলেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনও।

বিসিবির অন্যতম শীর্ষ পরিচালক ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, গেম ডেভেলপমেন্ট প্রধান খালেদ মাহমুদ সুজন, চেয়ারম্যান ইসমাইল হায়দার মল্লিক, প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন এবং তিন নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, হাবিবুল বাশার সুমন ও আব্দুর রাজ্জাক সে সময় বিসিবি সভাপতির সঙ্গে ছিলেন।

হাথুরুর সঙ্গে সাক্ষাতের পর উপস্থিত সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলেন নাজমুল হাসান পাপন। সেখানে সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান, নতুন হেড কোচের সঙ্গে কী কথা হলো?

বাংলাদেশের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর তার সঙ্গে বিসিবি প্রধানের কবে কোথায় প্রথম দেখা হয়? হাথুুরুকে তিনি অফার করেন আগে? নাকি হাথুরু নিজেই যেতে ইচ্ছে প্রকাশ করেন আবার হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিতে?

পাপন জানান, বাংলাদেশের হেড কোচ পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর হাথুরুর সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময়। তখনই তারা মানে বিসিবি জানতে চায়, হাথুরু বাংলাদেশকে আবার কোচিং করাতে ইচ্ছুক কিনা এবং তাকে পাওয়া যাবে কখন?

পাপন বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপের সময় হাথুরু যে শহরে থাকে, সেই সিডনিতে আমাদের টিমের খেলা ছিল। সে একদিন আমার সঙ্গে দেখা করতে হোটেলে আসে। আমরা একসঙ্গে কফি খেয়েছি। তখন আমি তার কাছে জানতে চাই সে কি অ্যাভেইলেবল বা ইন্টারেস্টেড কিনা। কথায় কথায় সে বললো, ইন্টারেস্টেড। সে জানালো যে, সে এই সময় অ্যাভেইলেবেল।’‘ওদিকে আমরা তখন আরও একাধিক হাই প্রোফাইল কোচের সঙ্গেও কথা বলছিলাম। যারাও অনেক নামি কোচ। কিন্তু তারা সবাই একটা শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। তাহলো, তাদের ব্রেক দিতে হবে। তারা প্রায় সবাই আইপিএল ও অন্য বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরে কোচিং করাতে চান। ওই সময়ে তাদের ছাড়তে হবে।’

‘আবার আরেক পক্ষ জানায়, তারা কোনো না কোনো দেশের হেড কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। সেক্ষেত্রে তারা আগামী বিশ্বকাপের পর কোচ থাকতে পারবেন। এখন নয়।’

পাপন বোঝানোর চেষ্ট করেন, যেহেতু এ বছরই ওয়ানডে বিশ্বকাপ, তাই তখনই তারা সিদ্ধান্ত নেন যে যিনি আইপিএলে নেই এবং বিশ্বকাপের আগেই দায়িত্ব নিতে পারবেন, এমন কাউকে কোচ করা হবে। আর ওই পদে হাথুরুই সেরা অপশন হয়ে যান।এ তো গেলো আগের কথা। আজ (বুধবার) বিকেলে হাথুরুর সাথে সাক্ষাতে কী আলাপ হলো? তিনি কী লক্ষ্যের কথা বললেন? আর হাথুরুর কাছে আপনাদের প্রত্যাশাই বা কী?

পাপনের জবাব, ‘কোনো কোচ আসলে আমার সাথে দেখা হয়। আমি দেখা করি। এবার আমি চিন্তা করলাম বিসিবিতে দেখা করবো। এখানে দেখা করলে কানেক্টেড পার্সনরাও থাকতে পারবেন। ছিলও। আজ তিন-চারজন বোর্ড ডিরেক্টর, সিইও, সিলেক্টরসরাও ছিলেন।’

‘আজকের সাক্ষাতটি নেহায়েত সৌজন্য সাক্ষাত। কোনো প্ল্যান-প্রোগ্রাম হয়নি, জানিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এর মাঝে দলে চেঞ্জ এসেছে। হাথুরু আগে সে সব চেঞ্জ জানুক। দেখুক, বুঝুক। তার আগে তার পক্ষে পরিকল্পনা করা কঠিন। তারপরও নির্বাচক এবং বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম হাথুরু প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে।’

‘প্রত্যাশা আসলে অনেক বেশি থাকে। আগেও ছিল। লাভ তো হয়নি। বিশ্বকাপে দেখেন। তবে ওয়ানডেতে আমরা ভালো খেলি, তাই প্রত্যাশা বেশি। উপমহাদেশে খেলা। এটাও প্লাস পয়েন্ট। যেহেতু ভারতে খেলা, তাই আমাদের দেশের সাথে খুব একটা আহামরি পার্থক্য থাকবে বলে মনে হয় না। উইকেট যেহেতু আমাদের মতোই, তাই আমার বিশ্বাস আমরা ভালো করবো।’

পাপন মনে করেন, বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলা উচিত। তার কথা, ‘আমাদের প্রথম টার্গেট হওয়া উচিত সেমিফাইনাল। এ টিম সিলেক্ট করা হয়েছে তার আসার আগেই। দুটি সিরিজ দেখতে হবে। না দেখলে পরিস্থিতি মাপতে পারব না। ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের সাথে দেখে সে লক্ষ্য ও পরিকল্পনা আঁটবে।’

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে কেমন উইকেট চায় বাংলাদেশ? বিসিবি প্রধানের কথা, ‘সব দেশই চায় তার দেশের মত কন্ডিশন করতে। ইংল্যান্ড টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। পেস আর স্পিন যে ধরনের উইকেটই হোক না কেন, ইংল্যান্ড খুবই ভালো। দেখি অধিনায়ক তামিম ও সাকিব কেমন উইকেট চায়। অস্বাভাবিক উইকেটের দিকে যাব না।’

পাপন জানিয়ে দিলেন, টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বিশ্রামে। তাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজে কেউ থাকবেন না এ পদে।

এদিকে বাংলাদেশ খুব করে চাচ্ছে, একজন সহকারী কোচ নিয়োগ দিতে। বিসিবি প্রধানের কথা শুনে মনে হলো, তারা চান দেশের কাউকে ওই পদে নিয়োগ দিতে।

পাপন বলেন, ‘আমরা আজ সহকারী কোচের বিজ্ঞাপন দিয়েছি। এবার বিদেশির পাশাপশি আমাদের লোকালরাও আবেদন করতে পারবে। দেখা যাক কারা উৎসাহ দেখান।’

শেয়ার করুন: