হংকংয়ে নভেল করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যু
চিকিৎসা কর্মীদের একটি অংশের ধর্মঘটের মধ্যে হংকংয়ে নভেল করোনাইভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার ভাইরাসটির তীব্র সংক্রমণের আক্রান্ত ৩৯ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল কর্মীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মৃত এই ব্যক্তি জানুয়ারিতে উহান শহরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানকেই নতুন ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার উৎসস্থল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এই নিয়ে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে চীনের বাইরে দুই জনের মৃত্যু হলো।
চীনের বাইরে প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে রোববার ফিলিপিন্সে। ৪৪ বছর বয়সী চীনা ওই ব্যক্তি উহান থেকে হংকং হয়ে ফিলিপিন্সে যাওয়ার পর রোগে ভুগে সেখানেই মারা যান।
এ পর্যন্ত নভলে করোনাভাইরাসে ১৫ জনের আক্রান্ত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে হংকং, এদের মধ্যে একজনের সংক্রমণ স্থানীয়ভাবে ঘটেছে।
মঙ্গলবার চীনে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২৫ জনে, নতুন ৩২২৫ জনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৪৩৮ জনে।
চীনের বাইরে অন্তত ২৫টি দেশ ও অঞ্চলে অন্তত ১৫১ জনের দেহে এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ছে।
চীনের সঙ্গে সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধসহ পাঁচটি দাবিতে ধর্মঘটে করছে হংকংয়ের চিকিৎসা কর্মীদের একটি অংশ। নবগঠিত হসপিটাল অথরিটি এমপ্লয়িজ অ্যালায়েন্স (এইচএইএ) সোমবার থেকে এ ধর্মঘট শুরু করেছে। তাদের ১৮ হাজার সদস্যের মধ্যে দুই হাজার ৭০০ সদস্য ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে এইচএইএ।
সরকারের কাছে তাদের জানানো দাবিগুলো হলো, মূলভূখণ্ড চীনের সঙ্গে সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করা, জনগণের মধ্যে মাস্ক বিতরণ সহজ করা, সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে থাকা মেডিকেল কর্মীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা ও সরবরাহ নিশ্চিত করা, রোগীদের জন্য যথেষ্ট পৃথক ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা এবং ধর্মঘটী মেডিকেল কর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার নিশ্চয়তা।
কাউলুনে হসপিটাল অথরিটির সদরদপ্তরের সামনে ও প্রধান সড়কে মাস্ক পরা ধর্মঘটী চিকিৎসা কর্মীরা প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছিল। প্ল্যাকার্ডে লেখা, “এখন হংকংকে রক্ষা করো। আমি হসপিটাল অথরিটি কর্মী ধর্মঘট করছি।”
সোমাবার হংকংয়ের কর্তৃপক্ষ চীনের মূল ভূখণ্ডের সীমান্তের আরও চারটি ক্রসিং বন্ধ করে দেয়। এখন শুধু হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ম্যাকাও ও চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ঝুহাইয়ের সঙ্গে সংযুক্ত সেতুটি এবং শেনঝেন বে পোর্ট খোলা রয়েছে।
হংকংয়ের নেতা ক্যারি লাম চীনের সঙ্গে হাইস্পিড ট্রেন ও আন্তঃসীমান্ত ফেরি চলাচল স্থগিত করলেও সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার মতো কোনো পদক্ষেপ নেননি। এ রকম পদক্ষেপ ‘অনুচিত ও অকার্যকর’ হবে জানিয়ে এটি ‘বৈষম্যমূলক’ হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।