স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য নতুন যন্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন
যন্ত্রণাময় অসুস্থতার কবল থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই মৃত্যু কামনা করেন। যন্ত্রণাপীড়িত জীবনের এ ধরনের মানুষদের স্বেচ্ছামৃত্যু বা আত্মহত্যায় সহায়তা করার জন্য নতুন একটি যন্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে সুইজারল্যান্ড সরকার।
যন্ত্রটির নাম ‘সারকো’। থ্রিডি প্রিন্টেড এ যন্ত্রটি ‘যন্ত্রণাহীন’ স্বেচ্ছামৃত্যুতে সহায়তা করবে। এটি তৈরি করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এগজিট ইন্টারন্যাশনাল।
বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যন্ত্রণাময় অসুস্থতা থেকে মুক্তি পেতে স্বেচ্ছামৃত্যু বেশিরভাগ দেশে অবৈধ হলেও, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, কানাডা এবং সুইজারল্যান্ড সহ কয়েকটি দেশে এ ধরনের আত্মহত্যা বৈধ। হাসপাতালে রোগীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে সাধারণত সোডিয়াম পেন্টোবারবিটাল ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে চিকিৎসক এক্ষেত্রে মৃত্যুবরণে সহায়তা করে থাকেন।
তবে স্বেচ্ছামৃত্যুবরণের এ পদ্ধতি আরো সহজ করে দিতে চায় এগজিট ইন্টারন্যাশনাল। ‘যন্ত্রণাহীন’ আত্মহত্যায় সহায়তা করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে ‘সারকো’ নামক যন্ত্রটি। এটি আত্মহত্যার পথকে অনেকটাই সহজ করে দেবে। কফিন আকৃতির এই যন্ত্রে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে আর কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে বেদনাহীন মৃত্যু ডেকে আনা হয়। যা মানুষকে ‘তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণভাবে এবং বেদনাহীনভাবে’ স্বেচ্ছামৃত্যুর সুযোগ দেবে
যন্ত্রটি পরিবহনযোগ্য। এই পরিষেবার আবেদন করবেন যে ব্যক্তি, তাঁর পছন্দের স্থানে যন্ত্রটি নিয়ে যাওয়া যাবে। মানে যেখানে তাঁর মৃত্যু হোক বলে চাইছেন তিনি, সেখানেই যন্ত্রটিকে নিয়ে যাবে সংস্থাটি। তাঁরা সেখানেই পুরো বিষয়টি পরিচালনা করবেন। যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেছেন ‘ডক্টর ডেথ’, যার আসল নাম ফিলিপ নিটশে। তাঁকে সবাই মৃত্যুর চিকিৎসক হিসেবেই চেনেন।
নির্মাতা কোম্পানিটি জানিয়েছে, এ পদ্ধতিতে মৃত্যুর জন্য নিয়ন্ত্রিত পদার্থের কোনো ইনজেকশনের প্রয়োজন হয় না এবং কোনো আতঙ্ক বা দম বন্ধ হওয়ার অনুভূতি নেই। যন্ত্রটি বাইরে থেকে পরিচালনা করার পাশাপাশি ভেতর থেকেও তা চালু করা যাবে। অর্থাৎ মৃত্যুর প্রত্যাশায় যে ব্যক্তি যন্ত্রটির ভিতর ঢুকবেন, তিনি নিজেও যন্ত্রটি চালাতে পারবেন।
২০২২ সালের মধ্যে মৃত্যুর নতুন এই পরিষেবা চালু করার জন্য সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এগজিট ইন্টারন্যাশনাল।