স্বামীকে ‘খুন’ করে থানায় স্ত্রীর ফোন
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
পারিবারিক বিরোধের জেরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় স্বামীকে ‘কুপিয়ে হত্যার’ পর পুলিশকে ফোন করেছে তারই স্ত্রী। রোববার রাত ৩টার দিকে উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ডারাবাড়ি গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানান ঠাকুরগাঁও সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চিত্ত রঞ্জন রায়।
নিহত স্বামী শরিফুল ইসলাম (৪০) বালিয়া ইউনিয়নের কুমারপুর গ্রামের নবিবর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় বালিয়া ইউনিয়নের বগুড়া বস্তি গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে ও নিহত শরিফুল ইসলামের তৃতীয় স্ত্রী মালেকা বেগমকে (২৮) আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ পরিদর্শক চিত্ত রঞ্জন বলেন, রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে তৃতীয় স্ত্রী মালেকা বেগম সদর থানার এসআই ভুষণ চন্দ্র বর্মনকে ফোন করে জানান সে তার স্বামী শরিফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্যই ওই নারীর ফোন থেকে বাড়ির মালিক শফিকুল ইসলামের সাথে কথা বলা হয়, এরপর তিনিও হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করেন এবং তৃতীয় স্ত্রী মালেকা বেগমকে আটক করা হয় বলে জানান তিনি। এদিকে থানায় আটক মালেকা বেগমের সাথে কথা বলা হলে তিনি ক বলেন, আমার স্বামী শরিফুল ইসলাম আমাকে হত্যার চেষ্টা করে; আমি প্রাণ বাঁচাতে গেলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ পরিদর্শক চিত্ত রঞ্জন আরও জানান, ২০০৬ সালে পারিবারিকভাবে শরিফা বেগম নামে এক নারীকে বিয়ে করেন শরিফুল ইসলাম। এরপর ২০০৭ সালে ওই নারীর মৃত্যু হয়। এরপর ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বার ঝরণা বেগম নামে আরেক নারীকে বিয়ে করেন শরিফুল ইসলাম।
অপরদিকে ২০১২ সালে প্রতিবেশী বগুড়া বস্তি গ্রামের বাসিন্দা মালেকা বেগমের সাথে শরিফুল ইসলামের ‘প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়।’ এ নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্ত্রীর মাঝে বিরোধ শুরু হয়।
এর জেরে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝরণা বেগম নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে স্বামীসহ মালেকার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন এবং তৃতীয় স্ত্রী মালেকা বেগমও একই আইনে স্বামীসহ দ্বিতীয় স্ত্রী ঝরণার বিরুদ্ধে পাল্টা আরেকটি মামলা দায়ের করেন বলে জানান তিনি।
মামলা হওয়ার পর থেকেই তাদের সংসারে বিরোধ চলছিল উলেখ করে চিত্ত রঞ্জন রায় বলেন, ডারাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা প্রতিবেশী মামা শফিকুল ইসলামের বাড়িতে প্রায় এক মাস ধরে ভাড়া থাকতেন মালেকা বেগম। সোমবার দিবাগত রাতে ওই বাড়িতে স্বামী শরিফুল ইসলাম আসেন। এরপর তৃতীয় স্ত্রী মালেকা বেগমের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মালেকা বেগম তার স্বামীকে বসিলা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করেন।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, সোমবার দুপুরে নিহতের বাবা নবিবর রহমান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।