স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের জন্য বিনামূল্যে টিকা চান শেখ হাসিনা

এক্ষেত্রে ধনী দেশ এবং বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় এশিয়া-ইউরোপ শীর্ষ সম্মেলনের (আসেম) অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের ১৪তম সভার উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া ভিডিও বক্তব্যে এই আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা আশা করছি, বিশ্ব খুব শিগগিরই কোভিড-১৯ এর কার্যকর টিকা পেতে যাচ্ছে। এসব টিকা অবশ্যই সব দেশের জন্য সহজলভ্য করতে হবে, বিশেষ করে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের জন্য বিনামূল্যে সরবরাহ করতে হবে। এক্ষেত্রে ধনী দেশ এবং বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উদারতা নিয়ে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।”

কোভিড-১৯ মহামারী সংকট মোকাবেলায় সুসমন্বিত রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বে বহুমুখী সমস্যার সৃষ্টি করেছে। এটিকে বৈশ্বিকভাবেই মোকাবেলা করা উচিত। এই সংকট মোকাবেলায় আমাদের একটি সু-সমন্বিত রোডম্যাপ প্রয়োজন।”

শেখ হাসিনা বলেন, “করোনা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বেইল আউটের হাত থেকে রক্ষার জন্য রাজস্ব প্রণোদনা, কনসেশনাল আর্থিক সহায়তা এবং ঋণ উপশম সুবিধা দিতে জি-৭, জি-২০, ওইসিডি দেশগুলো, বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ডিউটি-ফ্রি ও কোটা-ফ্রি বাজার সুবিধা এবং প্রযুক্তি সহায়তায় উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে।”

দেশগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতা নয়, সহযোগিতাই যে কোনো সংকট মোকাবেলা করতে পারে। এই কঠিন সময়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে আমাদের আরও বেশি সহযোগিতা প্রয়োজন।”

মহামারীতে সারা বিশ্বে সৃষ্ট স্থবিরতার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ সব দেশের স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মারাত্মক ধাক্কা দিয়েছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ চাকুরি হারিয়েছে, আয় উপার্জন বন্ধ। দারিদ্র্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। স্বাস্থ্য সেক্টর কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এ মহামারীতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো।

করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি পোষাতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ ও অর্থনৈতিক প্যাকেজ গ্রহণ করার পরও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় কোভিড-১৯ প্রভাব ফেলছে বলে জানান তিনি।

সংকট মোকাবেলায় ১৪ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারের ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।মহামারী শুরুর কয়েক মাসের ধাক্কার পর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি, প্রবাসী আয়, কৃষি উৎপাদনসহ অন্যান্য সূচকের উর্ধ্বমূখী প্রবণতায় বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।