May 19, 2024
জাতীয়

স্ত্রীকে হত্যা করে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ সাজানোর চেষ্টা

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

নিজের অন্তঃসত্ত¡া স্ত্রীকে খুনের পর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, কেউ তার স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে পালিয়ে গেছে। অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য করতে স্ত্রীর মরদেহ নগ্ন করে রেখেছিলেন তিনি। তবে পুলিশের তদন্তে ধরা পড়ে ‘হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন’ মো. কামরুজ্জামান (২৮) নামে নোয়াখালীর ওই যুবক।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি প্রিটন সরকার জানান, মঙ্গলবার রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার বাংলাবাজার গুলশান সোসাইটির একটি বাসা থেকে বিবি ফাতেমা ওরফে লিপি (২২) নামে অন্তঃসত্ত¡া ওই নারীর লাশ উদ্ধারের পর তার স্বামী কামরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই যুবকের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায়। চট্টগ্রাম নগরীতে দিনমজুরের কাজ করেন তিনি। স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাবাজারের গুলশান সোসাইটির একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।

ওসি প্রিটন সরকার বলেন, দাম্পত্য কলহের জেরে মঙ্গলবার বিকালে কামরুজ্জামান তার অন্তঃসত্ত¡া স্ত্রী লিপিকে মাথায় আঘাত করে খুন করে চলে যায়। রাতে পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় কামরুজ্জামানকে আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে।

কামরুজ্জামান পুলিশকে জানায়, তিনি আগে ওমানে থাকতেন। চার বছর আগে লিপিকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। ওমানে ভালো কিছু করতে না পেরে বছরখানেক আগে দেশে চলে আসেন এবং চট্টগ্রামে এসে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নির্মাণাধীন ভবনে ইট-বালি টানার কাজ করেন। চট্টগ্রামে এসে তিনি প্রথমে শেরশাহ এলাকায় ভাইয়ের বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। এক মাস আগে বাংলাবাজার গুলশান সোসাইটির কামাল সাহেবের ভবনের দ্বিতীয় তলায় বাসা ভাড়া নেন।

ওসি প্রিটন বলেন, মঙ্গলবার বিকালে কামরুজ্জামান বাসায় এসে স্ত্রীকে রান্নার কথা বললে দুইজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় কামরুজ্জামান স্ত্রীকে থাপ্পড় মারলে তিনি (স্ত্রী) শার্টের কলার ধরেন। তখন কামরুজ্জামান পুতা দিয়ে লিপির মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় কামরুজ্জামান লিপির পরনের জামা ছিঁড়ে বিবস্ত্র করে পুনরায় কাজে চলে যায়।

ওসি প্রিটন বলেন, কামরুজ্জামান রাতে বাসায় এসে লিপির ভাইকে ফোন করে লিপি অসুস্থ বলে খবর দেন। আবার ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের কাছে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন। এ ঘটনায় লিপির বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। লিপির পরিবারের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে কামরুজ্জামান যৌতুকের জন্য লিপিকে নির্যাতন করতেন। গত চার মাস আগে লিপি বাবার বাড়ি চলে যান। কামরুজ্জামান গিয়ে তাকে আবার ফিরিয়ে আনেন। এর মাঝে কামরুজ্জামানকে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *