সুন্দরবনের কালাবগি স্টেশন কর্মকর্তার খামখেয়ালীতে অতিষ্ঠ জেলে-বাওয়ালীরা
দ. প্রতিবেদক
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের দাকোপের কালাবগি স্টেশনের কর্মকর্তার খামখেয়ালীতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন জেলা-বাওয়ালীরা। বিএলসি নবায়ন, অনুমোদন ও মাছ ধরার অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ভদ্রা নদীর মাছ ধরার নিষিদ্ধ এলাকায় চোরাশিকারীদের মাছ ধরার ব্যবস্থা করে দেয়ার অভিযোগও উঠেছে।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, প্রায় তিন মাস আগে পশ্চিম সুন্দরবনের দাকোপের কালাবগি স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন মোঃ মনির।
স্থানীয় জেলে বাওয়ালীরা জানান, যোগদানের পর থেকেই তিনি শুরু করেন নানা অনিয়ম। বিএলসি নবায়নে কয়েকগুণ বেশী অর্থ আদায় করেছেন তিনি। নতুন বিএলসির জন্য তিনি তিন হাজার টাকা করে আদায় করেছেন। এ জন্য তিনি আগে টাকা নিয়ে পরে কাগজপত্র জমা নিয়েছেন।
স্টেশন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর তিনি নতুন নিয়ম চালু করেছেন। এক স্টেশনের বিএলসি দিয়ে অন্য কোন স্টেশন এলাকায় জেলে-বাওয়ালীদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। সুন্দরবনের কালাবগি এলাকায় মাছ ধরার ক্ষেত্রে জেলেদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে চলেছেন তিনি। এতে জেলেরা লোকসানের মুখে পড়ছেন। জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে পড়ছেন বিপাকে।
জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, খেওলা জালের জন্য প্রতি সপ্তাহের জন্য তাকে (জনপ্রতি) দিতে হচ্ছে তিন শত টাকার বেশী, চর জালের জন্য জনপ্রতি স্টেশন কর্মকর্তা নিচ্ছেন চার শত টাকা, যেখানে লাগে মাত্র দুই শত টাকা। ফাঁস জালের জন্য জন প্রতি স্টেশন কর্মকর্তা আদায় করছেন ৫ শত টাকা।
জেলেরা জানান, যারা তার চাহিদা মাফিক টাকা দিতে পারছেন না, তাদের মাছ ধরার অনুমতি মিলছে না। কিন্তু প্রতি নিয়ত কালাবগির বিভিন্ন এলাকায় বিষ দিয়ে মাছ শিকারীদের আনাগোনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। হরিণ শিকারীরা অবাধে বনে প্রবেশ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না স্টেশন কর্মকর্তা।
জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, রাজস্ব দিয়ে যারা বনে প্রবেশ করতে চাইছেন, তাদের যেতে না দিয়ে তিনি মংলা থেকে আসা জেলেদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে নিষিদ্ধ ভদ্রা নদীতে মাছ ধরার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ মনির।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ মনির বলেন, যারা অবৈধ সুবিধা নিতে পারছেন না তারাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, সুন্দরবনের নিয়ম অনুযায়ী জেলেদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করা হয়। কারো কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, যারা এধরনের কথা বলে, তাদের নিয়ে আসেন। তাদের সাথে সামনা সামনি কথা হবে। তারা অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কথা বলতেও পারবে না।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ